প্যারিস ডায়মন্ড লিগে নীরেজ চোপড়ার অসাধারণ সাফল্য

🎧 Listen in Audio
0:00

ভারতীয় এথলেটিক্সের স্বর্ণময় তারকা নীরেজ চোপড়া আবারও তাঁর অসাধারণ পারফর্ম্যান্স দিয়ে দেশকে গর্বিত করেছেন। ২0 জুন, ২০২৫ শুক্রবার প্যারিসে অনুষ্ঠিত ডায়মন্ড লিগে নীরেজ ৮৮.১৬ মিটারের দারুণ থ্রো করে শুধুমাত্র মৌসুমের প্রথম জয়ই অর্জন করেননি,

খেলাধুলার সংবাদ: ভারতীয় এথলেটিক্সের উজ্জ্বল তারকা নীরেজ চোপড়া আবারও তাঁর জৌলুষ ছড়িয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের পতাকা উড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। ২০ জুন, ২০২৫ প্যারিসে অনুষ্ঠিত ডায়মন্ড লিগে নীরেজ দারুণ পারফর্ম্যান্স করে ৮৮.১৬ মিটার ভালা ছুঁড়ে স্বর্ণপদক জিতে নিয়েছেন। এটি শুধুমাত্র একটি জয় ছিল না, বরং এটি ছিল তাঁর ক্যারিয়ারের পঞ্চম ডায়মন্ড লিগ খেতাব, যা স্পষ্ট করে দেয় যে নীরেজ এখন শুধুমাত্র অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন নন, বরং বিশ্বের সবচেয়ে স্থির ও নির্ভরযোগ্য জেভেলিং থ্রোয়ার হিসেবে পরিচিত।

প্রথম প্রয়াসেই জয়ের দাবি

প্রতিযোগিতার শুরুতে নীরেজ যেভাবে খেলেছেন তা শুধুমাত্র দর্শকদের উত্তেজিত করেনি, বরং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীদেরও চমকে দিয়েছে। নীরেজ প্রথম প্রয়াসেই ৮৮.১৬ মিটারের থ্রো করেছেন, যা শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ছিল। এই থ্রো তাঁকে বাকি থ্রোগুলিতে ‘ব্যাকফুট কিন্তু নিয়ন্ত্রণ’ এর অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিল, এবং তিনি এই লিড প্রতিযোগিতা শেষ হওয়া পর্যন্ত ধরে রেখেছিলেন।

নীরেজের প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে বড় নাম ছিল জার্মানির জুলিয়ান ওয়েবার, যিনি ২০২৩ সালের দোহা ডায়মন্ড লিগে নীরেজকে পরাজিত করেছিলেন। তবে এবার ওয়েবার ৮৬.২০ মিটারের বেশি এগোতে পারেননি এবং নীরেজের জন্য কোনও বাস্তব চ্যালেঞ্জ উপস্থাপন করতে পারেননি।

স্থায়িত্ব নীরেজের পরিচয়

যদিও নীরেজের বাকি পাঁচটি থ্রোর মধ্যে আর কোনও থ্রো ৮৮ মিটারের বেশি হয়নি, তবে তিনি প্রতিটি প্রয়াসেই শৃঙ্খলা ও ভারসাম্য বজায় রেখেছেন। থ্রোতে তাঁর কৌশল, রান-আপের তীব্রতা এবং থ্রোর পর নিয়ন্ত্রণ, এটি দেখায় যে নীরেজ এখন শুধুমাত্র শারীরিক নয়, মানসিকভাবেও খেলার সর্বোচ্চ স্তরে রয়েছেন। এই স্থায়িত্বই তাঁকে “ওয়ান টাইম অলিম্পিক হিরো” থেকে অনেক বড় খেলোয়াড় করে তুলেছে—একটি পরিচয় যা বিশ্বব্যাপী বহু বছর ধরে টিকে থাকবে।

ব্রাজিলের দা সিলভার সারপ্রাইজ

প্রতিযোগিতার শেষ পর্যায়ে আরও একটি নাটকীয় মোড় এসেছিল, যখন ব্রাজিলের মৌরিসিও লুইজ দা সিলভা ৮৬.২০ মিটার থ্রো করে নতুন মহাদেশীয় রেকর্ড গড়ে পোডিয়ামে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন। এর আগে ট্রিনিডাড অ্যান্ড টোবাগোর ওয়ালকট তৃতীয় স্থানে ছিলেন, কিন্তু দা সিলভার থ্রো সবাইকে চমকে দিয়েছিল।

প্যারিসে নীরেজের এই প্রত্যাবর্তন একটি প্রতীকী গল্প। ২০17 সালে যখন তিনি জুনিয়র চ্যাম্পিয়ন হিসেবে প্যারিসে এসেছিলেন, তখন তিনি প্রতিযোগিতায় পঞ্চম স্থানে ছিলেন। আর এখন, আট বছর পর, একই মাঠে নীরেজ বিজয়ী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছেন। এটি শুধুমাত্র র‍্যাঙ্কিংয়ের পরিবর্তন নয়, বরং এক দশকের কঠোর পরিশ্রম, শৃঙ্খলা এবং মানসিক শক্তির জীবন্ত উদাহরণ।

আগামীর পথ

নীরেজ এখন পরবর্তী সপ্তাহে, অর্থাৎ ২৪ জুন চেক প্রজাতন্ত্রের ওস্ট্রাভায় 'গোল্ডেন স্পাইক এথলেটিক্স মিট'-এ অংশগ্রহণ করবেন। কিন্তু এর চেয়ে বড় উৎসব দেখা যাবে যখন ৪ জুলাই প্রথমবার ভারতে তাঁর নামে 'নীরেজ চোপড়া ক্লাসিক' এর আয়োজন করা হবে। এটি ভারতীয় এথলেটিক্সের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হবে এবং তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠবে।

Leave a comment