ধোনীকে আইসিসি হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত

🎧 Listen in Audio
0:00

ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনীকে ক্রিকেট জগতের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মান, আইসিসি হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ধোনী ভারতের এগারতম ক্রিকেটার যিনি এই মর্যাদাপূর্ণ তালিকায় স্থান পেয়েছেন।

খেলাধুলার সংবাদ: ক্রিকেট ইতিহাসে তাঁর বুদ্ধিমত্তা, শান্ত স্বভাব এবং অনন্য অধিনায়কত্বের মাধ্যমে অম্লান ছাপ রেখে যাওয়া মহেন্দ্র সিং ধোনীকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পরিষদ (আইসিসি) হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত করে একটি ঐতিহাসিক সম্মান প্রদান করেছে। ধোনী এখন সেই সীমিত সংখ্যক दिग्गज খেলোয়াড়দের মধ্যে যোগ দিয়েছেন যারা এই মর্যাদাপূর্ণ সম্মান লাভ করেছেন। তিনি ভারতের এগারতম ক্রিকেটার যিনি আইসিসি হল অফ ফেমে স্থান পেয়েছেন।

এই ঘোষণার সাথে সাথে ভারতীয় ক্রিকেটে আরও একটি সুবর্ণ অধ্যায় যুক্ত হল। ধোনীর সাথে এই বছর হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত খেলোয়াড়দের মধ্যে রয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলা, গ্রেইম স্মিথ, অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথিউ হেডন, নিউজিল্যান্ডের স্পিনার ড্যানিয়েল ভিটোরি, পাকিস্তানের প্রাক্তন নারী অধিনায়ক সানা মীর এবং ইংল্যান্ডের উইকেটকিপার সারা টেলর।

ধোনীর সাফল্যের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

মহেন্দ্র সিং ধোনীকে কেবল ভারতেই নয়, বরং পুরো বিশ্বে সম্মান ও প্রশংসা করা হয়। আইসিসির এই সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে যে ধোনীর ক্যারিয়ার কেবল পরিসংখ্যানে নয়, বরং নেতৃত্ব, আত্মবিশ্বাস এবং মাঠে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলিতেও অসাধারণ ছিল। ধোনী ২০০৪ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের হয়ে অভিষেক করেছিলেন এবং পরবর্তী এক দশক ধরে ভারতীয় ক্রিকেটের মেরুদণ্ড হিসেবে আবির্ভূত হন। তাঁর অধিনায়কত্বে ভারত সেই স্থান অর্জন করেছে যা আগে কেবল স্বপ্ন ছিল।

তিনটি আইসিসি ট্রফি জেতা একমাত্র ভারতীয় অধিনায়ক

ধোনীর নেতৃত্বে ভারত তিনটি প্রধান আইসিসি খেতাব জিতেছে:

  • ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (প্রথম সংস্করণ)
  • ২০১১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ, যা তিনি শেষ ছক্কা মেরে ভারতকে জিতিয়ে দিয়েছিলেন
  • ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, যেখানে ভারত একটাও ম্যাচ হারেনি

এছাড়াও, তাঁর অধিনায়কত্বে ভারত ২০০৯ এবং ২০১৬ সালে এশিয়া কাপও জিতেছে। ধোনী ভারতীয় ক্রিকেটের একমাত্র অধিনায়ক যিনি আইসিসির তিনটি প্রধান খেতাব জিতেছেন।

২০২০ সালে ক্রিকেটকে বিদায় বলেছিলেন

ধোনী তাঁর শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন ২০০৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে, যেখানে ভারত পরাজিত হয়েছিল। এরপর তিনি ১৫ আগস্ট ২০২০ সালে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। তবে, তিনি আইপিএলে খেলা চালিয়ে যান এবং চেন্নাই সুপার কিংস (সিএসকে)-এর জন্য কেবলমাত্র একজন খেলোয়াড় হিসেবে নয়, বরং একজন শক্তিশালী অনুপ্রেরণা হিসেবে দলকে সাফল্যের উচ্চতায় পৌঁছে দেন।

আইপিএলেও ধোনীর আধিপত্য

ধোনী চেন্নাই সুপার কিংসকে ৫ বার আইপিএল খেতাব জিতিয়ে দিয়েছেন – ২০০৯, ২০১০, ২০১৮, ২০২১ এবং ২০২৩ সালে। এছাড়াও, তিনি ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টিও সিএসকে-র জন্য জিতেছিলেন। ২০২৫ সালে, ধোনী আবারও আনক্যাপড প্লেয়ার হিসেবে মাঠে ফিরে এসেছেন এবং অধিনায়ক ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ের অনুপস্থিতিতে আবার দলের নেতৃত্বে নিয়েছেন। এটি প্রমাণ করে যে ধোনী মাঠে কেবল একজন খেলোয়াড় নন, একজন অনুপ্রেরণা।

বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে অভিনন্দন

আইসিসি হল অফ ফেমে ধোনীকে অন্তর্ভুক্ত করার উপর বিসিসিআই সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম এক্স (প্রাক্তন টুইটার)-এর মাধ্যমে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেটের মহানায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনীকে আইসিসি হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আন্তরিক অভিনন্দন। তিনি এই তালিকায় স্থান পাওয়া ভারতের এগারতম খেলোয়াড়, বিসিসিআই লিখেছে।

ধোনীর পরিসংখ্যান

  • ওয়ানডে: ৩৫০ ম্যাচ, ১০,৭৭৩ রান, গড় ৫০.৫৭, ১০ শতক, ৭৩ অর্ধশতক, সর্বোচ্চ স্কোর ১৮৩*
  • টেস্ট: ৯০ ম্যাচ, ৪,৮৭৬ রান, গড় ৩৮.০৯, ৬ শতক, ৩৩ অর্ধশতক, সর্বোচ্চ ২২৪
  • টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক: ৯৮ ম্যাচ, ১,৬১৭ রান, গড় ৩৭.৬০, স্ট্রাইক রেট ১২৬.১৩
  • অধিনায়কত্বের রেকর্ড: টেস্টে ৬০ ম্যাচে অধিনায়কত্ব – ২৭ জয়, ১৮ পরাজয়, ১৫ ড্র | ভারতকে টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে প্রথমবারের জন্য নম্বর-১ করে তুলেছিলেন

ধোনীর নাম কেবল পরিসংখ্যান নয়, বরং সেই আত্মবিশ্বাস, কৌশলগত কৌশল এবং মাঠে ধৈর্যের সাথে জড়িত যা ভারতীয় ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।

ধোনীর সাথে হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত दिग्गजরা

  • হাশিম আমলা: দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে স্টাইলিশ এবং কৌশলগত দক্ষ ব্যাটসম্যানদের একজন
  • ম্যাথিউ হেডন: অস্ট্রেলিয়ার বিস্ফোরক ওপেনার
  • গ্রেইম স্মিথ: সবচেয়ে দীর্ঘ সময় টেস্ট অধিনায়কত্ব করা অধিনায়ক
  • ড্যানিয়েল ভিটোরি: নিউজিল্যান্ডের অন্যতম সেরা স্পিন অলরাউন্ডার
  • সানা মীর: পাকিস্তান নারী ক্রিকেটের প্রতীক
  • সারা টেলর: ইংল্যান্ডের উইকেটকিপার এবং নারী ক্রিকেটে নতুন প্রযুক্তির প্রতীক

Leave a comment