মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক চীনের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির ফলে পাকিস্তানের অর্থনীতিও প্রভাবিত হয়েছে, যেখানে শেয়ার বাজারে অবনতি ঘটেছে এবং পাকিস্তানকে ৫৬৪ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি ক্ষতি হতে পারে।
শুল্ক যুদ্ধ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে চলমান শুল্ক যুদ্ধ (Tariff War) এখন একটি নতুন মোড়ে পৌঁছেছে। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) চীনের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, কিন্তু এই সিদ্ধান্তের সবচেয়ে বড় ধাক্কা পেয়েছে পাকিস্তান (Pakistan)। যেখানে একদিকে চীনা শেয়ার বাজার (Chinese stock market) কিছুটা স্থিতিশীলতা দেখাচ্ছে, সেখানে অন্যদিকে পাকিস্তানের অর্থনীতি এই সিদ্ধান্তের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চীন থেকেও বেশি অবনতি পাকিস্তানের বাজারে
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির (tariff policy) প্রভাবে পাকিস্তানের শেয়ার বাজার (Pakistan Stock Market) গুরুতরভাবে প্রভাবিত হয়েছে। সোমবার এত বেশি অবনতি দেখা গেছে যে ট্রেডিং বন্ধ করতে হয়েছে। বুধবার KEC-100 সূচক 2,640.95 পয়েন্ট অবনতির সাথে 112,891.48 এ পৌঁছেছে। শুক্রবার PSK 424.21 পয়েন্ট পড়ে 115,765 এ নেমে এসেছে।
চীনের তুলনায় পাকিস্তানের বাজারের পারফরম্যান্স (Market performance) অনেক খারাপ ছিল। সাংহাই শেয়ার সূচক (Shanghai Stock Index) এ যেখানে মাত্র ১৪ পয়েন্টের সামান্য বৃদ্ধি দেখা গেছে, সেখানে গত পাঁচ দিনে সূচক প্রায় ৪% অবনতি পেয়েছে। YTD রিটার্ন এখন -3.39% পর্যন্ত নেমে এসেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাকিস্তানের ওপর শুল্ক আক্রমণ
যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবিলম্বে পাকিস্তানের ওপর ২৯% পারস্পরিক শুল্ক (Reciprocal Tariff) আরোপের সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রেখেছে, তবে এর মানসিক প্রভাব পাকিস্তানের অর্থনীতিতে (Economy) স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। নীতি থিঙ্ক ট্যাঙ্কের প্রতিবেদনের মতে, যদি এই শুল্ক আরোপ করা হয়, তাহলে পাকিস্তান ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রায় ৫৬৪ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি ক্ষতি (export loss) সহ্য করতে পারে। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে (worst-case scenario) এই ক্ষতি ২.২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
চীন দেখিয়েছে কঠোরতা, বলেছে- 'আমরা ভয় পাই না'
চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং (Xi Jinping) এই বিষয়ে কঠোর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, "শুল্ক যুদ্ধে কোনো বিজয়ী থাকে না।" তিনি আরও বলেছেন যে, চীন কখনোই কারো উপর নির্ভরশীল ছিল না এবং আমরা কোনো ধরনের অপ্রয়োজনীয় চাপে ভয় পাই না। সিনহুয়া সংবাদ সংস্থার (Xinhua News Agency) মতে, জিনপিং বলেছেন যে, চীন গত ৭০ বছর ধরে আত্মনির্ভরশীলতা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে এগিয়ে গেছে এবং ভবিষ্যতেও তার কৌশল (strategy) ধরে রাখবে।
বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের উপর মন্ডরায় আছে সংকট
বিশ্লেষকদের মতে, যদি এই শুল্ক যুদ্ধ আরও বেশি উত্তাল হয়, তাহলে এর প্রভাব কেবলমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন বা পাকিস্তানে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল (global supply chains), মুদ্রাস্ফীতি (inflation) এবং উদীয়মান অর্থনীতি (emerging economies) সবকিছুর উপর এর ব্যাপক প্রভাব (impact) পড়বে।
