ইসরায়েলে ট্রাম্পের স্বাগত, বিশ্বে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ: তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা

ইসরায়েলে ট্রাম্পের স্বাগত, বিশ্বে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ: তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা
🎧 Listen in Audio
0:00

আমেরিকার আক্রমণের পর ইসরায়েলে ট্রাম্পের স্বাগত, অন্যদিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ। লোকজন এই আক্রমণকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা বলে আখ্যায়িত করেছেন।

US Iran: ইরানের নিউক্লিয়ার স্থাপনায় আমেরিকার হামলার পর ইসরায়েলে রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপক স্বাগত জানানো হচ্ছে। তেল আবিবের হাইওয়ের ধারে বিশাল বিশাল হোর্ডিং লাগানো হয়েছে যেখানে লেখা আছে 'ধন্যবাদ, ট্রাম্প'। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুও আমেরিকার হামলার প্রশংসা করেছেন এবং এটিকে দেশের নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন।

এই সমর্থন ইসরায়েলের জনগণের সেই আশাকেই প্রতিফলিত করে যাতে তারা বিশ্বাস করে যে আমেরিকা তাদের নিরাপত্তার জন্য যেকোনো পর্যায়ে যেতে পারে। ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের বহু শহর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার সামরিক প্রতিক্রিয়াকে ত্রাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

অন্যদিকে শুরু হয়েছে বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ

যেখানে ইসরায়েল আমেরিকাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে, সেখানে বিশ্বের অনেক অংশে আমেরিকার এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা হচ্ছে। রাশিয়া, সৌদি আরব এবং অন্যান্য দেশ এই হামলাকে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের আগুন আরও জ্বালানোর চেষ্টা বলে মনে করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এটিকে একটি বিপজ্জনক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে যা আঞ্চলিক অস্থিরতা আরও বাড়াতে পারে।

কানাডায় 'Hands Off Iran' বিক্ষোভ

কানাডার রাজধানী টরন্টোতে আমেরিকার হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমেরিকার কনস্যুলেটের সামনে 'Hands Off Iran' নামে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভকারীরা কানাডা সরকারের কাছে ইসরায়েলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং তাদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা আরও বলেছেন যে আমেরিকার এই পদক্ষেপ বিশ্বকে নতুন যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাদের মতে, পশ্চিমা দেশগুলিকে সামরিক হস্তক্ষেপ বাদ দিয়ে শান্তির দিকে এগিয়ে আসা উচিত।

আমেরিকায় ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলন তীব্রতর

আমেরিকার ভিতরেও প্রতিবাদ বিক্ষোভ জোরদার হচ্ছে। নিউইয়র্ক সিটিতে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের ঘোষণার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। টাইমস স্কয়ার থেকে কলম্বাস সার্কেল পর্যন্ত একটি বৃহৎ মিছিল বের হয়। লোকেরা 'ইরানে যুদ্ধ বন্ধ করো' এবং 'মধ্যপ্রাচ্যে কোন নতুন যুদ্ধ নয়' ধরণের স্লোগান লেখা পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ করেছে।

বিক্ষোভকারীরা এই হামলাকে যুদ্ধের সূচনা বলে মনে করছেন। তাদের মতে, আমেরিকাকে এই সংঘাতের সমাধান কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে করা উচিত, সামরিক শক্তির মাধ্যমে নয়।

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা

সিবিএস নিউজের একটি প্রতিবেদনের মতে, আমেরিকার এই হামলার পর দেশজুড়ে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। অনেক সংগঠন ও কর্মীদের মতে, এই পদক্ষেপ আমাদের তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে। BAMN (By Any Means Necessary) এর আয়োজক ইভেট ফিলার্কা বলেছেন, এটি কেবলমাত্র কিছু বোমা ফেলা নয়, বরং এটি একটি বিশ্বব্যাপী সংকটের ইঙ্গিত। তিনি বলেছেন ইরান কোন ছোট দেশ নয়। এটি একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র এবং এর উপর হামলা সমগ্র বিশ্বকে সংকটে ফেলতে পারে। তিনি আমেরিকার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও প্রশ্ন তুলেছেন।

ডেমোক্র্যাটদের নীরবতার উপর প্রশ্ন

বিক্ষোভের সময় আয়োজক শন ব্ল্যাকমন ডেমোক্রেটিক দলের নীরবতার উপরও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন যে যারা নিজেদেরকে ট্রাম্প থেকে আলাদা দাবি করে, তারাই এখন নীরব। তার মতে, এখন সময় এসেছে সকল রাজনৈতিক দলের স্পষ্ট অবস্থান গ্রহণ এবং এই যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়ার।

জনগণের দাবি- মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি

বিক্ষোভকারীদের প্রধান দাবি হল আমেরিকা এবং তার সহযোগী দেশগুলিকে মধ্যপ্রাচ্যে যে কোন ধরণের সহিংসতা এবং সামরিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত শান্তির দিকে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হয় না, ততক্ষণ পর্যন্ত প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে। তাদের বিশ্বাস, সামরিক হস্তক্ষেপ কোন সমস্যার সমাধান নয়, বরং এর ফলে আরও অশান্তি এবং প্রাণহানি ঘটে।

```

Leave a comment