নগীনা থেকে সাংসদ চন্দ্রশেখর আজাদ এদিনগুলিতে রোহিণী ঘাওয়ারী প্রকরণকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ও সামাজিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। রোহিণী ঘাওয়ারী চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যক্তিগত অভিযোগ আনেন, যার ফলে এই ঘটনা ক্রমশ প্রসার লাভ করছে।
রাজস্থান: নগীনা থেকে নবনির্বাচিত সাংসদ এবং ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ এদিনগুলিতে এক ব্যক্তিগত বিবাদকে কেন্দ্র করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। সমাজকর্মী ও শিক্ষাবিদ রোহিণী ঘাওয়ারী তাঁর বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত অভিযোগ আনেন, যার উপর চন্দ্রশেখর প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। যদিও তিনি সরাসরি এই অভিযোগগুলিকে অস্বীকার বা স্বীকার করেননি, তবে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তিনি এই পুরো বিষয়টি আইনানুগ পন্থায় সমাধান করতে চান, না মিডিয়া বা সোশ্যাল মিডিয়ার আদালতে।
কী অভিযোগ?
রোহিণী ঘাওয়ারী গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক পোস্ট করে চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে মানসিক আঘাত, বিবাহ গোপন করা, এবং সম্পর্ক অস্বীকার করার মতো বেশ কিছু অভিযোগ আনেন। তাঁর দাবি, ২০২১ সালে চন্দ্রশেখরের সাথে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক শুরু হয়েছিল, যা ছিল স্বচ্ছ ও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু, যখন চন্দ্রশেখর রাজনীতিতে শক্তিশালী হলেন এবং সাংসদ হলেন, তাঁর আচরণ সম্পূর্ণরূপে বদলে গেল।
রোহিণীর অভিযোগ, চন্দ্রশেখর তাঁর দাম্পত্য জীবনের তথ্য তাঁর কাছ থেকে গোপন করেছিলেন, এবং যখন তিনি এই সত্যের সাথে পরিচিত হলেন, তখন তিনি সম্পর্ক ভেঙে ফেলতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁকে তা থেকেও বিরত রাখা হয়েছিল।
এখন চন্দ্রশেখর কী বললেন?
একটি সংবাদ সম্মেলনে যখন তাঁকে এই বিবাদ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়, তখন চন্দ্রশেখর আজাদ সরাসরি কোনো মানসিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি। তিনি সংযত ভাষায় বলেছেন: এটি নারী সম্মানের সাথে জড়িত বিষয়। আমার পরিবার আমাকে সবসময় নারীদের প্রতি সম্মান ও মর্যাদা বজায় রাখার শিক্ষা দিয়েছে। আমার জানা আছে যে এই বিষয়টি এখন আদালতে রয়েছে, তাই যা কিছু বলার আছে, আমি আদালতেই বলবো।
তাঁর এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। সমর্থকদের দাবি, চন্দ্রশেখর একজন দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে আচরণ করছেন, অন্যদিকে সমালোচকদের কাছে এই উত্তর অসন্তোষজনক মনে হচ্ছে।
রোহিণী ঘাওয়ারীর তীব্র পাল্টা আক্রমণ
চন্দ্রশেখরের এই প্রতিক্রিয়ার পর রোহিণী ঘাওয়ারীও দেরি না করে জবাব দিয়েছেন। তিনি একটি দীর্ঘ পোস্ট লিখে বলেছেন, একবার বলুন যে আমি মিথ্যা বলছি! কিন্তু আপনি বলবেন না, কারণ আপনি জানেন যে আমি যা সহ্য করেছি, তা সব সত্য। তিনি চন্দ্রশেখরকে নিয়ে কটাক্ষ করে বলেছেন, আপনার এটা নিয়ে গর্ব আছে যে ২০২০ সালের পর আপনার বিরুদ্ধে ৪০টির বেশি মামলা হয়েছে এবং সরকার তবুও জেলে পাঠায়নি। এছাড়াও তিনি আদালতে অডিও প্রমাণ উপস্থাপন করার কথা বলেছেন এবং বলেছেন যে তাঁর আত্মসম্মান এখন কোনো ক্ষমায় পুনঃস্থাপিত হতে পারবে না।
কী এটি একটি নতুন বিতর্কের সূচনা?
এই পুরো বিবাদটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে সামনে নিয়ে এসেছে, রাজনীতিতে ব্যক্তিগত জীবনের স্বচ্ছতা এবং নৈতিক দায়িত্ব। চন্দ্রশেখরের মতো নেতা, যিনি সামাজিক ন্যায় ও দলিত অধিকারের লড়াইয়ের মুখ হয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযোগ উঠা অনেক প্রশ্ন তুলে ধরে। কী জনসাধারণের জীবনে ব্যক্তিগত সম্পর্কের আচরণও জনগণের প্রশ্নের আওতায় আসে? কী ব্যক্তিগত বিবাদগুলিকে রাজনৈতিক নৈতিকতা থেকে আলাদা রাখা যায়?
বিষয়টি এখন সরাসরি আদালতে পৌঁছে গেছে। রোহিণী ঘাওয়ারী ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তিনি এই লড়াই আইনিভাবে লড়বেন এবং চন্দ্রশেখরকে জনগণের সামনে নয়, বরং বিচার বিভাগের সামনে উন্মোচন করবেন। তিনি বলেছেন, আপনার কথার রেকর্ডিং আমি হয়তো সোশ্যাল মিডিয়ায় দিতে পারব না, কিন্তু আদালতে মানুষ অবশ্যই শুনবে। সত্যের জয় হবে।