নেশনাল হেরাল্ড মানি লন্ডারিং মামলার শুনানি আজ আবারও দিল্লির রাউজ এভিনিউ কোর্টে হবে, যেখানে কংগ্রেস নেতা সোনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধীর সাথে জড়িত বিষয়টির উপর আলোচনা হবে। কোর্ট চত্বরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে শুনানির সময় কোনও ধরনের অশান্তি না হয়।
নতুন দিল্লি: নেশনাল হেরাল্ড মামলা আবারও শিরোনামে। আজ দিল্লির রাউজ এভিনিউ কোর্টে এই বহুচর্চিত মানি লন্ডারিং মামলার শুনানি হবে, যেখানে কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধী, সাংসদ রাহুল গান্ধী এবং অন্যান্য কয়েকজন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। আজ কোর্টে স্যাম পিত্রোদার পক্ষ থেকে চার্জশিটের বিরুদ্ধে যুক্তি উপস্থাপন করা হবে। এর আগে ২ মে আদালত গান্ধী পরিবার, ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড এবং অন্যান্য সহ-অভিযুক্তদের নোটিস জারি করেছিল।
কী নেশনাল হেরাল্ড মামলা?
এই মামলার শিকড় ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়কালের সাথে জড়িত। ১৯৩৮ সালে পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু ‘নেশনাল হেরাল্ড’ নামক একটি সংবাদপত্রের সূচনা করেছিলেন। এটির প্রকাশনা এসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড (AJL) কর্তৃক করা হত, যা আরও দুটি সংবাদপত্র ‘নবজীবন’ (হিন্দি) এবং ‘কৌমি আওয়াজ’ (উর্দু) প্রকাশ করত।
২০০৮ সালের দিকে AJL তীব্র আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়ে এবং সংবাদপত্রের প্রকাশনা বন্ধ করতে হয়। সে সময় কোম্পানির উপর প্রায় ৯০ কোটি টাকা ঋণ ছিল, যা কংগ্রেস দল ঋণ দিয়েছিল।
বিরোধের সূত্রপাত
২০১০ সালে কংগ্রেস নেতারা ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি নতুন কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে, যার ৭৬ শতাংশ শেয়ার রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধীর কাছে ছিল। বাকি ২৪ শতাংশ শেয়ার শীর্ষ কংগ্রেস নেতা মোতিলাল বোরা এবং অস্কার ফার্নান্দেসকে দেওয়া হয়। এর পর কংগ্রেস দল AJL কে দেওয়া ৯০ কোটি টাকার ঋণ ইয়ং ইন্ডিয়ানকে স্থানান্তর করে।
যেহেতু AJL ঋণ পরিশোধ করার অবস্থায় ছিল না, তাই এটি তার অধিকাংশ অংশ (প্রায় ৯৯ শতাংশ শেয়ার) ইয়ং ইন্ডিয়ানকে দিয়ে দেয়। ইয়ং ইন্ডিয়ান এর বিনিময়ে মাত্র ৫০ লক্ষ টাকা প্রদান করে।
সুব্রমণ্যম স্বামীর আবেদন
বিজেপি নেতা ডঃ সুব্রমণ্যম স্বামী এই লেনদেন নিয়ে ২০০২ সালে আদালতে আবেদন দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস নেতারা মাত্র ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে ৯০ কোটি টাকার সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ করেছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং প্রতারণামূলক। তিনি এটিকে মানি লন্ডারিং এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন। আবেদনে বলা হয়েছে যে রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধী পরিকল্পিতভাবে এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করেছেন, যার ফলে ইয়ং ইন্ডিয়ান নেশনাল হেরাল্ডের অচল সম্পত্তি, যা কোটি কোটি টাকার, এর মালিকানা পেয়েছে।
এর উপর অভিযোগ আছে যে ইয়ং ইন্ডিয়ান একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মতো কাজ করছে, যদিও এটি ধারা ২৫ (এখন ধারা ৮) অনুসারে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধিত।
আজকের শুনানিতে কী বিশেষ হবে?
আজ আদালতে চার্জশিটের বিরুদ্ধে স্যাম পিত্রোদার পক্ষ থেকে যুক্তি উপস্থাপন করা হবে। স্যাম পিত্রোদা ইয়ং ইন্ডিয়ানের বোর্ড সদস্য এবং তাঁর দাবি, পুরো বিষয়টি রাজনৈতিক প্রতিশোধের উদ্দেশ্যে প্রেরিত। কোর্টের বাইরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং মিডিয়ার নজর এই শুনানির উপর আটকে আছে।
```