হনুমান বেনিওয়ালের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে উঠে এল গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন

🎧 Listen in Audio
0:00

লোকসভা সাংসদ হনুমান বেনিওয়াল তাঁর নিরাপত্তায় নিয়োজিত কমান্ডোদের সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সরকারের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে তাঁকে আধুনিক অস্ত্রবিহীন গার্ড দেওয়া হয়েছে। নাগৌর এসপি জানিয়েছেন যে বেনিওয়ালের বিরুদ্ধে একটি মামলায় এফআর (ফাইনাল রিপোর্ট) জারি করা হয়নি।

জয়পুর: রাজস্থানের রাজনীতিতে আবারও নিরাপত্তা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। নাগৌর থেকে লোকসভা সাংসদ এবং আরএলপি (রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টি)-এর সংযোজক হনুমান বেনিওয়াল তাঁর নিরাপত্তায় গুরুতর অবহেলার অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন যে রাজ্য সরকার তাঁর নিরাপত্তায় নিয়োজিত কমান্ডোদের সরিয়ে দিয়েছে এবং এখন যারা গার্ড দেওয়া হয়েছে, তাদের কাছে কোনও আধুনিক অস্ত্র নেই। এমন অবস্থায় যদি তাঁর উপর হামলা হয়, তাহলে এর দায়িত্ব কার?

নিরাপত্তা কমানো নিয়ে হনুমান বেনিওয়ালের প্রশ্ন

হনুমান বেনিওয়াল বলেছেন যে গত ১১ বছর ধরে তাঁর কাছে কোনও অস্ত্র নেই। ২০১৪ সালে তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়েছিল, যার জেরে তিনি তাঁর লাইসেন্সধারী পিস্তল এবং বন্দুক থানায় জমা দিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন যে ২০১৭ সালে ওই মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট (এফআর) জারি হয়ে গেছে, অর্থাৎ মামলা শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁকে তাঁর অস্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি।

তিনি আরও বলেছেন যে ইন্টেলিজেন্স সংস্থাগুলি বারবার জানিয়েছে যে তাঁর জীবনের হুমকি রয়েছে এবং তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়া উচিত। কিন্তু রাজ্যে ভজনলাল শর্মা সরকার আসার পর থেকে তাঁর নিরাপত্তা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

নাগৌর পুলিশের উত্তর: তদন্ত এখনও চলছে, অস্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি

নাগৌরের এসপি নারায়ণ টোগাস হনুমান বেনিওয়ালের অভিযোগের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে যে মামলায় বেনিওয়াল তাঁর অস্ত্র থানায় জমা দিয়েছিলেন, সেই মামলায় এখনও ফাইনাল রিপোর্ট (এফআর) জারি করা হয়নি, অর্থাৎ মামলা সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়নি। তাই তাঁর অস্ত্র এখনও ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি।
তদুপরি টোগাস জানিয়েছেন যে যখন বেনিওয়াল অস্ত্রের লাইসেন্স পুনরায় করানোর (রিনিউ করানোর) জন্য আবেদন করেছিলেন, তখন তিনি জয়পুরে দায়ের হওয়া আরও একটি মামলার তথ্য গোপন করেছিলেন। এই কারণে লাইসেন্সের প্রক্রিয়া বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

টোগাস আরও বলেছেন যে হনুমান বেনিওয়ালকে নিরাপত্তা কেবলমাত্র নাগৌর জেলার সীমানায় দেওয়া হয়েছে, সমগ্র রাজ্য বা দেশ জুড়ে নয়। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের সিদ্ধান্ত, পুলিশ কেবলমাত্র আদেশ পালন করে।

হনুমান বেনিওয়ালের নিরাপত্তা কমানোর পিছনে কি কোনও রাজনৈতিক কারণ রয়েছে?

হনুমান বেনিওয়াল সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন - 'যদি আমার উপর হামলা হয়, তাহলে দায়ী কে হবে?' এই প্রশ্ন তিনি তখন করেছিলেন যখন তাঁর নিরাপত্তায় নিয়োজিত কমান্ডোদের সরিয়ে দেওয়া হয় এবং তাঁদের বদলে আধুনিক অস্ত্রবিহীন গার্ড নিয়োজিত করা হয়।

এই ঘটনা কেবলমাত্র নিরাপত্তার নয়, বরং এর সম্পর্ক রাজনৈতিক পরিবেশের সাথেও যুক্ত বলে মনে হচ্ছে, কারণ বর্তমানে রাজস্থান এবং দেশজুড়ে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরেশোরে চলছে। বেনিওয়ালের দাবি, আগেও ইন্টেলিজেন্স সংস্থাগুলি তাঁর জীবনের হুমকির কথা জানিয়েছিল এবং সেই ভিত্তিতেই তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন সরকার পরিবর্তনের পর তাঁর নিরাপত্তা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁকে দুর্বল করতে চায়, যাতে তিনি নির্বাচনে কার্যকর ভাবে অংশগ্রহণ করতে না পারেন। তিনি স্পষ্ট করে জিজ্ঞাসা করেছেন -
'আমার নিরাপত্তা কেন কমিয়ে দেওয়া হল? কি এটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র?' এই প্রশ্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ তিনি আরএলপি (রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টি)-এর জাতীয় সংযোজক এবং রাজ্যের রাজনীতিতে তাঁর ভূমিকা ক্রমশ বাড়ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নিরাপত্তা কমানোর মতো পদক্ষেপ নেতাদের উপর চাপ সৃষ্টি করার উপায় হতে পারে। বিশেষ করে যখন নির্বাচন নিকটে, তখন এই ধরনের সিদ্ধান্তের প্রভাব জনসাধারণের উপরও পড়ে।

১১ বছর ধরে থানায় রয়েছে হনুমান বেনিওয়ালের অস্ত্র - এখনও পর্যন্ত ফিরে পাননি

হনুমান বেনিওয়াল সম্প্রতি জানিয়েছেন যে গত ১১ বছর ধরে তাঁর কাছে কোনও ব্যক্তিগত অস্ত্র নেই, কারণ তাঁর লাইসেন্সধারী অস্ত্রগুলি পুলিশ থানায় জমা রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন যে ২০১৪ সালে একটি মামলা দায়ের হওয়ার পর তিনি তাঁর পিস্তল এবং বন্দুক পুলিশের কাছে জমা দিয়েছিলেন। পরে, ২০১৭ সালে ওই মামলায় এফআর (ফাইনাল রিপোর্ট) জারি হয়ে গিয়েছিল, অর্থাৎ পুলিশ তদন্ত সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল।

তবুও, বেনিওয়ালকে এখনও পর্যন্ত তাঁর অস্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। তিনি বারবার প্রশাসনের কাছে তাঁর অস্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছেন, কিন্তু কোনও সুনির্দিষ্ট উত্তর পাননি। এখন অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে তাঁর কাছে কোনও অস্ত্র নেই, এবং সরকারি গার্ডদের কাছেও আধুনিক অস্ত্র নেই। ফলে তাঁর উদ্বেগ আরও বেড়েছে। তাঁর বক্তব্য, যখন বারবার তাঁর জীবনের হুমকির কথা বলা হচ্ছে, তখন অস্ত্রবিহীন অবস্থায় নিরাপত্তা কিভাবে সম্ভব?

হনুমান বেনিওয়ালের প্রশ্ন - দায়ী কে হবে?

হনুমান বেনিওয়াল সরকারের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করেছেন, যদি আমার জীবনের কোনও হুমকি হয়, তাহলে দায়ী কে হবে? তাঁর বক্তব্য, এটি কেবলমাত্র তাঁর ব্যক্তিগত প্রশ্ন নয়, বরং এটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সাথে সম্পর্কিত। যদি একজন জনপ্রতিনিধির নিরাপত্তায় অবহেলা করা হয়, তাহলে সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা কী হবে?

বেনিওয়াল আরও বলেছেন যে যখন ইন্টেলিজেন্স সংস্থাগুলি তাঁর জীবনের হুমকির কথা জানিয়েছিল, তখন সরকারের তাঁর নিরাপত্তা বাড়ানো উচিত ছিল, কিন্তু এখন তাঁর নিরাপত্তা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন হল, যদি কোনও নেতার নিরাপত্তায় ত্রুটি থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কিভাবে নিশ্চিত করা যাবে?

Leave a comment