কমল হাসনের ‘ঠগ লাইফ’: তামিলনাড়ুতে সাফল্য, কর্ণাটকে বিতর্ক

🎧 Listen in Audio
0:00

কমল হাসনের ছবি ‘ঠগ লাইফ’ তামিলনাড়ুতে বুকিংয়ে সাফল্য পেয়েছে, কিন্তু কর্ণাটকে ভাষা নিয়ে বিতর্কের জেরে মুক্তি বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে ছবির ব্যবসায় প্রভাব পড়েছে।

কমল হাসনের নতুন ছবি ‘ঠগ লাইফ’ নিয়ে বর্তমানে ব্যাপক আলোচনা চলছে। যেখানে তামিলনাড়ুতে এই ছবি মুক্তির আগেই কোটি কোটি টাকার অগ্রিম বুকিং করে সাড়া ফেলে দিয়েছে, সেখানে কর্ণাটকে ছবিটি মুক্তি দেওয়া নিয়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষত, কর্ণাটকে বর্তমানে ‘ঠগ লাইফ’ এর জন্য একটিও পর্দা পাওয়া যাচ্ছে না। এই বিতর্কের কারণ হল কমল হাসনের ভাষাগত মন্তব্য, যা কর্ণাটকে ছবিটি মুক্তির উপর নিষেধাজ্ঞার পথ সুগম করে দিয়েছে।

‘ঠগ লাইফ’ এর তামিলনাড়ুতে তুমুল প্রি-বুকিং

কমল হাসনের ‘ঠগ লাইফ’ তামিলনাড়ুতে মুক্তির আগেই বক্স অফিসে তুমুল সাফল্যের পূর্বাভাস দিচ্ছে। প্রতিবেদনের মতে, তামিলনাড়ুতে এই ছবির অগ্রিম বুকিং প্রায় ৪ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে, যা এই বছরের সবচেয়ে বড় প্রি-বুকিং বলে মনে করা হচ্ছে। তামিল দর্শকরা কমল হাসনের এই নতুন প্রজেক্টের জন্য ব্যাপক উৎসাহিত এবং ছবির মুক্তির দিন বহু সংখ্যক দর্শক সিনেমাহলে ভিড় করতে পারে।

কর্ণাটকে একটিও পর্দা পাওয়া যায়নি

অন্যদিকে কর্ণাটকের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো। কর্ণাটক ফিল্ম চেম্বার অফ কমার্স (KFCC) স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে যে যতক্ষণ না কমল হাসন ক্ষমা চান, ততক্ষণ পর্যন্ত রাজ্যে ‘ঠগ লাইফ’ মুক্তি দেওয়া হবে না। কর্ণাটকে এখনও পর্যন্ত এই ছবির জন্য একটিও পর্দা বরাদ্দ করা হয়নি, যার ফলে নির্মাতারা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। কর্ণাটকের বাজার তামিল ছবির জন্য বেশ বড় বলে মনে করা হয়, তাই এখানে মুক্তি না পাওয়া নির্মাতাদের জন্য বড় ধাক্কা।

হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন নির্মাতারা

ছবির নির্মাতারা এই বিতর্ক নিয়ে কর্ণাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। তারা বলেছেন যে কেবলমাত্র একজন শিল্পীর বক্তব্যের কারণে পুরো ছবির মুক্তি বন্ধ করা ঠিক নয়, কারণ এতে ছবির পুরো দল এবং দর্শক উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপরও, কর্ণাটক ফিল্ম চেম্বার তাদের সিদ্ধান্তে অটল এবং ছবিটি সেখানকার সিনেমাহলে মুক্তি দিতে দেওয়া হচ্ছে না। এর ফলে ছবির প্রথম দিনের আয় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ কর্ণাটক একটি বড় বাজার এবং সেখানে মুক্তি না পাওয়ায় ছবিটি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।

‘ঠগ লাইফ’ থেকে কত আয়ের আশা?

বক্স অফিসের जानकारরা মনে করছেন যে ছবিটি তার প্রথম দিনে ভারতে ৩০ থেকে ৩৫ কোটি টাকার ব্যবসা করতে পারে। এটি কমল হাসনের কর্মজীবনের সবচেয়ে বড় ওপেনিং হতে পারে। যদি কর্ণাটকেও ছবিটি মুক্তি পেত, তাহলে এই সংখ্যা ৪০ কোটি টাকা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারত। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ৫-৬ কোটি টাকার ক্ষতি নিশ্চিত বলে মনে করা হচ্ছে।

কেরলে ধীর গতি, কিন্তু ওয়ার্ড অফ মাউথে আশা

কেরলে ‘ঠগ লাইফ’ এর অগ্রিম বুকিংয়ের গতি ধীর। ছবির বিতরকদের মতে, এখানকার দর্শকরা ‘ওয়ার্ড অফ মাউথ’ এ বেশি বিশ্বাস করে। অর্থাৎ, যদি ছবিটি ভাল রিভিউ এবং জনপ্রিয়তা পায়, তাহলে সেখানকার দর্শক সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।

কমল হাসনের আগের ছবি ‘বিক্রম’ কেরলে মুক্তির পরে তুমুল সাড়া পেয়েছিল। তাই নির্মাতারা আশা করছেন এখানেও ‘ঠগ লাইফ’ ধীরে ধীরে দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হবে।

‘হাউসফুল ৫’ এর সঙ্গে সরাসরি লড়াই

আকর্ষণীয় ব্যাপার হল, ‘ঠগ লাইফ’ ৫ জুন মুক্তি পাচ্ছে, অন্যদিকে অক্ষয় কুমারের বহু প্রতীক্ষিত ছবি ‘হাউসফুল ৫’ ৬ জুন সিনেমাহলে আসবে। উভয় ছবিরই অনুরাগী অনেক। যদিও একটি তামিল এবং অন্যটি হিন্দি ছবি হওয়ার কারণে তাদের টার্গেট দর্শক ভিন্ন, কিন্তু বক্স অফিসের লড়াইয়ে তাদের মুখোমুখি দেখার মতো হবে।

কী বলছেন সিনে ট্রেড বিশ্লেষক?

সিনে ট্রেড বিশ্লেষক রমেশ বালা মনে করেন যে কমল হাসনের ছবি ‘ঠগ লাইফ’ প্রযুক্তিগত দিক থেকে খুবই ভালো এবং প্রভাবশালী। এই ছবির পরিচালনা করেছেন মণিরত্নম-এর মতো অভিজ্ঞ ও সফল পরিচালক, যিনি সবসময় দর্শকদের সিনেমাহলে টেনে আনতে সফল হয়েছেন। তিনি বলেছেন যে যদি ছবিটি নিয়ে বিতর্ক দ্রুত সমাধান হয়, তাহলে কর্ণাটকেও এটি দর্শকদের কাছ থেকে বেশ ভাল সাড়া পাবে এবং এর ব্যবসা আরও ভালো হবে।

Leave a comment