আপনা দল (এস): উত্তরপ্রদেশের নতুন প্রদেশ সভাপতি হিসেবে আরপি গৌতম নির্বাচিত

🎧 Listen in Audio
0:00

আপনা দল (এস) উত্তরপ্রদেশের নতুন প্রদেশ সভাপতি হিসেবে আরপি গৌতমকে নির্বাচিত করেছে। জাটব সম্প্রদায়ের অন্তর্গত গৌতমকে এই দায়িত্ব সংগঠন বিস্তার ও নির্বাচনী প্রস্তুতির প্রেক্ষিতে দেওয়া হয়েছে।

UP রাজনীতি: কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুপ্রিয়া প্যাটেলের দল আপনা দল (এস) উত্তরপ্রদেশে দলকে শক্তিশালী করার জন্য একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। দল আরপি গৌতমকে উত্তরপ্রদেশের নতুন প্রদেশ সভাপতি নিয়োগ করেছে। আরপি গৌতম জাটব ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের অন্তর্গত, যা উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে একটি বৃহৎ ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে বিবেচিত। আগামিকালীন পৌর নির্বাচন এবং ২০২৭ সালের বিধানসভা নির্বাচন মাথায় রেখে এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে দল দলিত ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর প্রতি তাদের ফোকাস বাড়াতে চলেছে।

কেন আরপি গৌতমকে দেওয়া হল এই দায়িত্ব

আরপি গৌতমের এই নিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে কারণ তিনি আপনা দল (এস)-এর সহযোগিতা মঞ্চের প্রদেশ সভাপতি হিসেবে কাজ করেছেন। এই সময়ে তিনি তাঁর পরিশ্রম ও নিষ্ঠার মাধ্যমে দলের বিশ্বাস অর্জন করেছেন। দলের সূত্র মতে, গৌতমের এই নিয়োগ দলিত ও পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মধ্যে দলের গ্রাসকে আরও শক্তিশালী করবে। দলের নেতারা মনে করেন তাঁর সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা এবং জনসমর্থন আগামী নির্বাচনে দলকে সুফল দেবে।

অনুপ্রিয়া প্যাটেল বিশ্বাস প্রকাশ করেছেন

আপনা দল (এস)-এর প্রধান ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুপ্রিয়া প্যাটেল বলেছেন, তিনি পুরোপুরি আশাবাদী যে আরপি গৌতমের নেতৃত্বে দল আরও শক্তিশালী হবে। তিনি বলেছেন গৌতমের দলের প্রতি নিষ্ঠা ও কাজের প্রতি একনিষ্ঠা দলের বিস্তারে সাহায্য করবে। অনুপ্রিয়া প্যাটেল বলেছেন উত্তরপ্রদেশে সংগঠনকে শক্তিশালী করা এবং যত বেশি সম্ভব পিছিয়ে পড়া ও দলিত শ্রেণীর মানুষকে একত্রিত করা দলের প্রধান লক্ষ্য, এবং এই দিকে গৌতমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।

পিছিয়ে পড়া ও দলিত শ্রেণী দলের প্রধান লক্ষ্য

উল্লেখ্য যে উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে জাটব সম্প্রদায়ের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) দীর্ঘদিন ধরে এই শ্রেণীর সমর্থন পেয়ে আসছে। এই পরিস্থিতিতে আপনা দল (এস)ও এই ভোট ব্যাঙ্ককে আকৃষ্ট করার চেষ্টা শুরু করেছে। আরপি গৌতমের নিয়োগ এই কৌশলেরই অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।

দলে সাম্প্রতিক সময়ে আঘাতের প্রভাব

সম্প্রতি আপনা দল (এস) তখন আঘাত পেয়েছিল যখন তৎকালীন প্রদেশ সভাপতি রাজকুমার পাল পদত্যাগ করেছিলেন। রাজকুমার পাল অভিযোগ করেছিলেন যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুপ্রিয়া প্যাটেল ও তাঁর স্বামী আশীষ প্যাটেল দলের কর্মীদের উপেক্ষা করছেন।

তাঁর সাথে সাথে প্রদেশ সম্পাদক কমলেশ বিশ্বকর্মা, সংখ্যালঘু মঞ্চের প্রদেশ সম্পাদক মোহাম্মদ ফাহিম এবং জেলা মহাসচিব বিএল পাষীও দল ত্যাগ করেছিলেন। এর আগেও অনেক জেলার সভাপতি দল ত্যাগ করেছেন।

আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দল

আপনা দল (এস) আগামী পৌর নির্বাচন এবং ২০২৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। দলের নেতৃত্ব চায় সংগঠনকে স্থানীয় পর্যায়ে শক্তিশালী করা হোক যাতে প্রতিটি শ্রেণীর ভোটারের সাথে যোগাযোগ করা যায়। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া এবং দলিত শ্রেণীর ভোটারদের আকর্ষণ করাই দলের কৌশলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
আরপি গৌতমের নিয়োগকে এই কৌশলেরই অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। দল চায় গৌতম তাঁর অভিজ্ঞতা ও সামাজিক ভিত্তিকে কাজে লাগিয়ে নতুন কর্মীদের আকর্ষণ করবেন এবং তাদের দলের প্রতি আস্থা বাড়াবেন।

নতুন সভাপতির সামনে চ্যালেঞ্জ

তবে, আরপি গৌতমের সামনে চ্যালেঞ্জ কম নেই। দলে সাম্প্রতিক সময়ে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ ও নেতাদের পদত্যাগ সংগঠনকে দুর্বল করেছে। তাই তাঁর প্রথম কাজ হবে দলের কর্মীদের আবার একত্রিত করা এবং সংগঠনে নতুন প্রাণ ফোঁটা। এর সাথে সাথে তাঁকে এটাও দেখতে হবে যে দলের ভিত্তি শুধুমাত্র একটি শ্রেণী বা সম্প্রদায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং সকল শ্রেণীর মধ্যে দলের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।

Leave a comment