যোগোজুনা: WWE-র ‘সুমো সুপারস্টার’ এর অসাধারণ জীবন ও মৃত্যু

যোগোজুনা: WWE-র ‘সুমো সুপারস্টার’ এর অসাধারণ জীবন ও মৃত্যু
সর্বশেষ আপডেট: 15-05-2025

যোগোজুনা, যার আসল নাম ছিল রডনি আগাতু আনোয়াই, WWE-র ইতিহাসের সবচেয়ে ভারী ও প্রভাবশালী রেসলারদের মধ্যে একজন হিসেবে বিবেচিত হন। তিনি সমোয়ান বংশোদ্ভূত ছিলেন, কিন্তু WWE-তে তাকে একজন জাপানি সুমো রেসলার হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিল।

খেলাধুলার খবর: WWE-তে অনেক রেসলার তাদের শক্তি, উচ্চতা ও অনন্য ব্যক্তিত্বের জন্য পরিচিত। কিন্তু যদি কথা হয় অত্যন্ত ভারী দেহের মালিক পেশাদার কুস্তিগীরদের সম্পর্কে, তাহলে এক নাম সবার উপরে উঠে আসে—যোগোজুনা। আসল নাম রডনি আনোয়াই, কিন্তু পুরো বিশ্ব তাকে তার রিং নাম "যোগোজুনা" দিয়ে চিনে। তিনি WWE-র এমন একজন সুপারস্টার ছিলেন যার ওজন কখনও ৬০০ পাউন্ড (প্রায় ২৭২ কিলোগ্রাম) ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তার ওজন এবং অসাধারণ খাদ্যাভ্যাস তাকে অনুরাগীদের কাছে এক অনন্য পরিচয় দিয়েছিল।

রেসলিংয়ের জগতের ‘সুমো সুপারস্টার’

যোগোজুনা ৯০-এর দশকে WWE-র সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ও প্রভাবশালী রেসলারদের একজন ছিলেন। তার চরিত্র জাপানি সুমো রেসলারের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল, কিন্তু তিনি আসলে আমেরিকান সমোয়া বংশোদ্ভূত এবং বিখ্যাত আনোয়াই পরিবারের সদস্য ছিলেন, যার মধ্যে রোমান রেইন্স, দ্য উসোস এবং দ্য রক-এর মতো दिग्गजরা রয়েছেন। ১৯৯৩ সালে তিনি হাল্ক হোগান-এর মতো दिग्गजকে পরাজিত করে WWE চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিলেন এবং দুবার WWE চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। এত বড় শরীর সত্ত্বেও তার রিং-এর আন্দোলন অসাধারণ ছিল। রিং-এ তিনি অত্যন্ত ফুর্তিলা দেখাতেন, যা তার উচ্চতার তুলনায় অবিশ্বাস্য ছিল।

যোগোজুনার আশ্চর্যজনক খাদ্যাভ্যাস

যোগোজুনার শরীরের রহস্য তার খাদ্যাভ্যাসে লুকিয়ে ছিল। সেই খাদ্যাভ্যাস সাধারণ মানুষের জন্য নয়, বরং একটা ফুড চ্যালেঞ্জের চেয়ে কম ছিল না। রিপোর্ট অনুযায়ী, যোগোজুনা প্রতিদিন ২৪০টি ডিম, প্রায় ৩ কিলোগ্রাম চিকেন এবং একটা পুরো বালতি ভাত খেতেন। তার খাদ্যে এত ক্যালোরি ছিল যে তা একটা ছোট পরিবারের এক সপ্তাহের খাবারের সমান ছিল।

তার একজন আত্মীয় এবং বর্তমান WWE সুপারস্টার জিমি উসো একটা সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে তিনি যোগোজুনাকে একবার একাই ১০০ টি টার্কি টেলস (টার্কির লেজ) খেতে দেখেছিলেন। যোগোজুনা মায়োনেজও খুব পছন্দ করতেন এবং তিনি অনেক কিছুর সাথে তা খেতেন।

ওজন বরদানও আর চ্যালেঞ্জও

যোগোজুনার বিশাল দেহ WWE-তে তার চরিত্রের জন্য উপকারী ছিল। কিন্তু এই ওজনই তার জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জও ছিল। তাকে অনেকবার তার স্বাস্থ্য নিয়ে সংগ্রাম করতে হয়েছিল। WWE তার বাড়ন্ত ওজন দেখে তাকে ফিটনেসের দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল, কিন্তু এটা সহজ ছিল না। ২০০০ সালে, মাত্র ৩৪ বছর বয়সে, যোগোজুনার মৃত্যু হয়।

তার মৃত্যু হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়ার ফলে হয়েছিল, যা তার অত্যধিক ওজন এবং জীবনধারার সাথে জড়িত ছিল। এই ঘটনা রেসলিং জগতের জন্য একটা বড় ধাক্কা ছিল।

WWE-তে আজও স্মরণ করা হয় যোগোজুনাকে

যদিও যোগোজুনা আর আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তার স্মৃতি আজও WWE-র ইতিহাসে জীবন্ত। ২০১২ সালে তাকে WWE হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তার বিশাল দেহ, ধামাকাদার প্রবেশ এবং রিং-এ তার আধিপত্যমূলক পারফরম্যান্স আজও দর্শকদের মনে সতেজ। যোগোজুনার নাম আজও সেই রেসলারদের তালিকায় আসে যারা শুধুমাত্র তাদের উচ্চতা দিয়েই নয়, বরং তাদের প্রতিভাবান এবং পারফরম্যান্স দিয়েও WWE-তে অমূল্য অবদান রেখেছে।

Leave a comment