২০৩৬ সালের অলিম্পিক: ভারতের দাবিদারিত্ব ও চ্যালেঞ্জ

২০৩৬ সালের অলিম্পিক: ভারতের দাবিদারিত্ব ও চ্যালেঞ্জ
সর্বশেষ আপডেট: 28-03-2025

ওলিম্পিক খেলার আয়োজনের জন্য ভারত নিজের দাবিদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। ভারতীয় অলিম্পিক সংঘ (IOA) গত বছর অক্টোবরে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (IOC)-কে একটি আনুষ্ঠানিক আগ্রহ প্রকাশ পত্র জমা দিয়েছিল, যাতে ভারত অলিম্পিক এবং প্যারা অলিম্পিক খেলার আয়োজনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল।

খেলাধুলার সংবাদ: ২০৩৬ সালের ওলিম্পিক খেলার আয়োজনের জন্য ভারত নিজের দাবিদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। ভারতীয় অলিম্পিক সংঘ (IOA) গত বছর অক্টোবরে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (IOC)-কে একটি আনুষ্ঠানিক আগ্রহ প্রকাশ পত্র জমা দিয়েছিল, যাতে ভারত অলিম্পিক এবং প্যারা অলিম্পিক খেলার আয়োজনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল। সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে জানা গেছে যে এই আয়োজনের জন্য ভারতকে প্রায় ৩৪,৭০০ কোটি টাকা থেকে ৬৪,০০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে হতে পারে। এই বাজেট ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকের অনুমানিত ব্যয় (৩২,৭৬৫ কোটি টাকা)-এর দ্বিগুণ।

গুজরাট হবে মূল কেন্দ্র, অন্যান্য শহরও থাকবে অন্তর্ভুক্ত

সম্প্রতি গান্ধীনগরে একটি উচ্চ পর্যায়ের সমন্বয় কমিটির বৈঠক হয়েছে, যেখানে ‘সমীক্ষা বৈঠক - আহমেদাবাদ ২০৩৬-এর জন্য প্রস্তুতি’ নামক একটি দলিল উপস্থাপন করা হয়। এই প্রতিবেদনের মতে, আহমেদাবাদ এবং গান্ধীনগরকে আয়োজনের জন্য মূল স্থান হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে। তদ্বিপরীত ভোপাল, গোয়া, মুম্বই এবং পুণে-র মতো শহরগুলিকেও খেলার আয়োজনের জন্য সম্ভাব্য স্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে এই সকল স্থানের উন্নয়নের জন্য ব্যাপক পরিসরে মৌলিক অবকাঠামো এবং যানবাহন ব্যবস্থার উপর বিনিয়োগ করা হবে।

IOC-এর সভাপতি কির্স্তি কোভেন্ট্রির প্রতিক্রিয়া

IOC-এর নতুন সভাপতি কির্স্তি কোভেন্ট্রি ২০৩৬ অলিম্পিক খেলার আয়োজক নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলেছেন যে এটি একটি বিস্তৃত প্রক্রিয়া এবং আগামী কয়েক মাস ধরে চলবে। তিনি এও ইঙ্গিত করেছেন যে আয়োজক দেশ নির্বাচনে স্বচ্ছতা এবং অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য নতুন কৌশল গ্রহণ করা যেতে পারে। কোভেন্ট্রি স্পষ্ট করে বলেছেন যে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তিনি এই বিষয়ে তার মতামত শেয়ার করবেন।

কাতার এবং সৌদি আরব সহ ১০টির বেশি দেশ প্রতিযোগিতায়

২০৩৬ অলিম্পিক খেলার আয়োজনের প্রতিযোগিতায় ভারত একা নয়। কাতার, সৌদি আরব সহ ১০টির বেশি দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে এখনও এটা স্পষ্ট নয় যে কোন কোন দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের দাবিদারিত্ব জমা দিয়েছে। ভারতের প্রস্তাব এখন অব্যাহত আলোচনার পর্যায়ে প্রবেশ করেছে, যা থেকে স্পষ্ট হয় যে দেশটি IOC-এর প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

২০২৬ সালের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে

IOC সম্ভাব্য আয়োজকদের দাবিদারিত্ব পর্যালোচনা করছে, যাতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলির প্রকল্প, অবকাঠামো, আর্থিক অবস্থা এবং খেলার সংস্কৃতির গভীর অধ্যয়ন করা হবে। প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপে ‘লক্ষ্যবস্তু সংলাপ’ শুরু হবে, যার অধীনে প্রতিটি আগ্রহী দেশকে একটি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব জমা দিতে হবে। ভবিষ্যতের আয়োজক কমিশন এই প্রস্তাবের মূল্যায়ন করবে এবং তারপরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আশা করা হচ্ছে ২০২৬ সালের মধ্যে ২০৩৬ অলিম্পিক খেলার আয়োজক দেশ ঘোষণা করা হবে।

ভারতের জন্য অলিম্পিকের আয়োজন করা শুধুমাত্র দেশের বিশ্বব্যাপী ছবির উন্নতিই সাধন করবে না, বরং খেলার অবকাঠামোতেও ব্যাপক উন্নয়ন আনবে। এতে বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ হবে এবং পর্যটন বৃদ্ধি পাবে। তবে এত বড় আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক বিনিয়োগ এবং যানবাহন ব্যবস্থাপনা ভারতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।

Leave a comment