নীতীশ কুমার রেড্ডিকে পার্থ টেস্ট ম্যাচের জন্য নির্বাচন করাটা বেশ অপ্রত্যাশিত ছিল, কারণ তিনি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাঁর আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত ছিলেন। তবে, তিনি এই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছেন এবং অন্ধ্রপ্রদেশের এই অলরাউন্ডার প্রমাণ করেছেন যে তিনি শুধু টি-টোয়েন্টিতেই নন, টেস্ট ক্রিকেটেও নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে সক্ষম।
স্পোর্টস নিউজ: ভারতীয় দলের তরুণ খেলোয়াড় নীতীশ কুমার রেড্ডি বক্সিং-ডে টেস্ট ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন। এই ম্যাচে তিনি কঠিন পরিস্থিতিতে একটি সেঞ্চুরি করেন, যা তাঁর ক্যারিয়ারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। নীতীশ পার্থ টেস্ট ম্যাচে তাঁর টেস্ট অভিষেক করেছিলেন, এরপর তিনি অ্যাডিলেড এবং ব্রিসবেনেও খেলে তিনবার হাফ সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়েও ব্যর্থ হন। তবে, মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) তিনি শুধু হাফ সেঞ্চুরিই করেননি, বরং সেটাকে সেঞ্চুরিতে রূপান্তর করতেও সফল হয়েছেন।
নীতীশ কুমার রেড্ডির বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন
নীতীশ কুমার রেড্ডি এই টেস্ট সিরিজে তাঁর ব্যাটিং দিয়ে শুধু নিজের যোগ্যতাই প্রমাণ করেননি, বরং একটি বিশেষ কৃতিত্বও অর্জন করেছেন। তিনি সিরিজে সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকানো ব্যাটসম্যানের খেতাব জিতেছেন। নীতীশ শুধু টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর সক্ষমতা প্রমাণ করেননি, বরং যখনই প্রয়োজন হয়েছে, তিনি তাঁর টি-টোয়েন্টির আগ্রাসনও দেখিয়েছেন।
এছাড়াও, নীতীশ অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ খেলার সময় কোনও সফরকারী ব্যাটসম্যানের দ্বারা সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ডও নিজের নামে করেছেন। এই ক্ষেত্রে তিনি ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক মাইকেল ভনের সঙ্গে যৌথভাবে প্রথম স্থানে এসেছেন। মাইকেল ভন ২০০৩-০৪ সালে অ্যাশেজ সিরিজের সময় আটটি ছক্কা মেরেছিলেন, এবং এখন নীতীশ তাঁর সঙ্গে সেই রেকর্ড স্পর্শ করেছেন, যা এই অর্জনকে আরও বিশেষ করে তুলেছে।
গাঙ্গুলি ও ধাওয়ানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেন নীতীশ রেড্ডি
নীতীশ কুমার রেড্ডি তাঁর প্রথম টেস্ট অর্ধশতককে শতকে রূপান্তরিত করে এক বড় কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। তিনি সেই নির্বাচিত ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, যারা তাদের প্রথম টেস্টে অর্ধশতককে শতকে রূপান্তরিত করেছেন। এই তালিকায় ভারতের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যানদের নাম রয়েছে, যাদের মধ্যে সৌরভ গাঙ্গুলী, শিখর ধাওয়ান, মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, সুরেশ রায়না এবং প্রবীণ আমরের মতো খেলোয়াড়রা রয়েছেন।
এমসিজিতে নীতীশ ওয়াশিংটন সুন্দরের সঙ্গে জুটি বেঁধে দারুণ পার্টনারশিপ করেন এবং ভারতকে কঠিন সময় থেকে বের করে আনেন। অস্ট্রেলিয়ার ৪৭৪ রানের বিশাল স্কোরের জবাবে ভারত ২২১ রানেই সাত উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল, এবং মনে হচ্ছিল ভারতীয় দল দ্রুতই প্যাভিলিয়নে ফিরে যাবে। কিন্তু নীতীশ এবং সুন্দর ধৈর্য ধরে খেলে একটি শত রানের পার্টনারশিপ গড়েন, যা ভারতীয় দলকে শক্তিশালী করে এবং অস্ট্রেলিয়ার জন্য সমস্যা তৈরি করে।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ভারতের আট ও নয় নম্বরের ব্যাটসম্যানরা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তাদের মাটিতে ৫০-এর বেশি রান করলেন। এর আগে ২০০৮ সালে অ্যাডিলেড টেস্টে অনিল কুম্বলে এবং হরভজন সিংও এমনটা করেছিলেন।
```