আদিল রশিদের ভয়াবহ ওভার: ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে দ্বিতীয় সবচেয়ে ব্যয়বহুল ওভার

আদিল রশিদের ভয়াবহ ওভার: ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে দ্বিতীয় সবচেয়ে ব্যয়বহুল ওভার
সর্বশেষ আপডেট: 09-06-2025

ইংল্যান্ডের হয়ে টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ওভারের রেকর্ড এখনও স্টুয়ার্ট ব্রডের নামে রয়েছে, যাকে ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যুবরাজ সিংহ এক ওভারে ৬টি ছক্কা মেরে ৩৬ রান করেছিলেন।

খেলাধুলার খবর: ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে এমন এক দৃশ্য দেখা গেল, যা ২০০৭ সালের ডারবানের স্মৃতি ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে ফিরিয়ে এনেছে। ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ লেগ স্পিনার আদিল রশিদকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই তুফানী ব্যাটসম্যান, জেসন হোল্ডার ও রোমারিও শেফার্ড ১৯তম ওভারে এমনভাবে লক্ষ্যবস্তু করেছেন যে, তিনি ইংল্যান্ডের ইতিহাসে দ্বিতীয় সবচেয়ে ব্যয়বহুল ওভারের অধিকারী হয়েছেন।

আদিল রশিদের ভয়াবহ ওভার, ছক্কার বৃষ্টি

ম্যাচের ১৯তম ওভারে যখন অধিনায়ক জোস বাটলার রশিদকে বল দিলেন, তখন তিনি হয়তো ভাবতেও পারেননি যে এই ওভার ম্যাচের দিকনির্দেশনা নয়, রেকর্ড বইয়ের চিত্রও বদলে দেবে। ক্রিজে ছিলেন দুই শক্তিশালী হিটার – জেসন হোল্ডার ও রোমারিও শেফার্ড, এবং এই দুজনেই এই ওভারটিকে ছক্কার বৃষ্টিতে পরিণত করেছেন।

  • প্রথম বল: হোল্ডার ডীপ স্কয়ার লেগের উপরে চমৎকার ছক্কা মারেন।
  • দ্বিতীয় বল: লং অনের উপরে আরেকটি শক্তিশালী ছক্কা।
  • তৃতীয় বল: ধারাবাহিকভাবে তৃতীয় ছক্কা, এবার মিডউইকেটের উপরে দিয়ে।
  • চতুর্থ বল: এক রান নিয়ে হোল্ডার স্ট্রাইক শেফার্ডকে দেন।
  • পঞ্চম বল: শেফার্ড স্ট্রেইট ছক্কা মারেন।
  • ষষ্ঠ বল: আবার সেই ফলাফল – ছক্কা এবং ওভার শেষ।
  • মোট রান: ৩১

ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ওভার

  1. স্টুয়ার্ট ব্রড - ৩৬ রান, ভারত (যুবরাজ সিংহ) ২০০৭
  2. আদিল রশিদ - ৩১ রান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০২৫
  3. স্যাম কারেন - ৩০ রান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০২২
  4. স্যাম কারেন - ৩০ রান, অস্ট্রেলিয়া ২০২০
  5. লিয়াম লিভিংস্টোন - ৩০ রান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০২২

রশিদের নামে আরেকটি অবাঞ্ছিত রেকর্ড

এই ম্যাচে রশিদের ৪ ওভারে মোট ৫৯ রান হয়েছে, এবং তিনি একটিও উইকেট পাননি। টি-টোয়েন্টিতে অভিজ্ঞ বোলারের কাছ থেকে এ ধরণের পিটুনি ইংল্যান্ডের বোলিংয়ের গভীরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, বিশেষ করে ডেথ ওভারে। প্রথমে ব্যাটিং করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬ উইকেটে ১৯৬ রানের শক্তিশালী স্কোর তৈরি করে। ইনিংসের শুরু ধীর ছিল, কিন্তু মিডিল ও ডেথ ওভারে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা প্রচুর রান করেছে।

  • শাই হোপ: ৪৯ রান (৩৬ বল)
  • জন্সন চার্লস: ৪৭ রান (২৮ বল)
  • রোভম্যান পাওয়েল: ৩৫ রান (১৫ বল)
  • জেসন হোল্ডার: অপরাজিত ২৯ রান (৯ বল)
  • রোমারিও শেফার্ড: অপরাজিত ২০ রান (৬ বল)

এই অসাধারণ ব্যাটিংয়ের কেন্দ্রবিন্দু ছিল সেই ১৯তম ওভার, যাতে ৫টি ছক্কার সাথে ৩১ রান যোগ হয়েছে।

ইংল্যান্ডের বোলিং ফিকে

ইংল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে যদি কেউ প্রভাব ফেলেছেন, তিনি হলেন লুক উড, যিনি ৪ ওভারে মাত্র ২৫ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন। অন্য বোলাররা বেশ ব্যয়বহুল প্রমাণিত হয়েছে।

  • মার্ক উড: ৪ ওভার - ৪২ রান
  • স্যাম কারেন: ৪ ওভার - ৪০ রান
  • মোহিন আলি: ২ ওভার - ১৮ রান
  • রশিদ: ৪ ওভার - ৫৯ রান

ডেথ ওভারে ইংলিশ বোলাররা সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছেন। রশিদের ওভার শুধুমাত্র রানের দিক থেকে নয়, মানসিক চাপ এবং ম্যাচের দিকনির্দেশনা পরিবর্তনকারী মোড় হিসেবেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেখানে ১৭০-এর আশেপাশে ইনিংসের দিকে এগিয়ে ছিল, সেখানে এই ওভার স্কোরকে সরাসরি ১৯৬-এ পৌঁছে দিয়েছে।

Leave a comment