সময় রায়না ও ৫ ইনফ্লুয়েন্সারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের কঠোর অবস্থান

সময় রায়না ও ৫ ইনফ্লুয়েন্সারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের কঠোর অবস্থান
সর্বশেষ আপডেট: 05-05-2025

জনপ্রিয় ইউটিউবার এবং স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান সময় রায়না সহ আরও পাঁচজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারের অসুবিধা আরও বেড়ে গেছে। সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের সকলের ব্যক্তিগত উপস্থিতির বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়ে সরাসরি আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

সময় রায়না বিতর্ক: জনপ্রিয় ইউটিউবার এবং স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান সময় রায়নার আইনি জটিলতা আরও গভীর হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট সময় রায়না সহ পাঁচজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারকে একটি গুরুতর মামলায় আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানির সময় আদালত এই নির্দেশ জারি করেছে, যেখানে এই ডিজিটাল কন্টেন্ট নির্মাতাদের উপর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অনুভূতিকে আঘাত করা এবং একটি বিরল রোগের উপহাস করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

‘স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফি’ নিয়ে করা মন্তব্যই কারণ

একটি এনজিও ‘কিউর এসএমএ ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া’ দায়ের করা এই আবেদনে বলা হয়েছে যে, সময় রায়না তার কমেডি শো ‘ইন্ডিয়াজ গট ল্যাটেন্ট’-এ ‘স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফি’ (এসএমএ) রোগীদের উপহাস করেছেন। এই রোগটি একটি গুরুতর স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাধি, যা ধীরে ধীরে শরীরের পেশীগুলিকে দুর্বল করে তোলে।

এনজিওর দাবি, রায়না এবং অন্যান্য ইনফ্লুয়েন্সারদের এই কাজটি কেবলমাত্র অসংবেদনশীলই ছিল না, বরং এতে এই বিরল রোগে আক্রান্ত হাজার হাজার পরিবারের অনুভূতি আঘাত পেয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট বলেছে – এ ধরণের কাজকে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না

বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি এন. কোটিশ্বর সিংহের বেঞ্চ মামলার শুনানি করে বলেছে যে, সোশ্যাল মিডিয়ার পৌঁছ এবং প্রভাব বিবেচনায় এ ধরণের অসংবেদনশীল মন্তব্যকে উপেক্ষা করা যাবে না। বেঞ্চ বলেছে, এই ইনফ্লুয়েন্সারদের উপস্থিতি প্রয়োজন, যাতে এটা জানা যায় যে তারা এই সামগ্রী কী উদ্দেশ্যে প্রচার করেছে এবং এর পিছনে কী উদ্দেশ্য ছিল।

সুপ্রিম কোর্ট মুম্বাই পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছে যে, সময় রায়না এবং অন্য চারজন ইনফ্লুয়েন্সারকে নোটিশ জারি করতে হবে। যদি তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদালতে হাজির না হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আদালত আরও বলেছে যে, এই বিষয়টিকে কেবলমাত্র "মজা" বা "মনোরঞ্জন" দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যাবে না, কারণ এটি সামাজিক অনুভূতি ও সংবেদনশীলতার সাথে জড়িত।

আটর্নি জেনারেলের কাছ থেকে আইনি মতামত চাওয়া হয়েছে

বেঞ্চ এই মামলায় দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল আর. ভেঙ্কটরমণির সহযোগিতা চেয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট তাঁর কাছ থেকে এ ব্যাপারে পরামর্শ চেয়েছে যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বা বিরল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের উপহাস করার মতো সামগ্রী নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কী আইনি কাঠামো গ্রহণ করা যেতে পারে।

সুপ্রিম কোর্টের এই কঠোর মন্তব্য এবং নির্দেশনা থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে, এখন ডিজিটাল স্পেসেও সামাজিক মর্যাদা এবং সংবেদনশীলতার নিয়ম পালন করা প্রয়োজন। আদালত বলেছে, এ ধরণের ঘটনায় সংশোধনমূলক ও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন, যাতে সমাজের দুর্বল শ্রেণীর মানসিক নির্যাতন বন্ধ করা যায়।

Leave a comment