ওটিটি-র জগতে ববি দেওল অভিনীত ‘আশ্রম’ সিরিজের নাম উঠলেই, এই ওয়েব সিরিজটি ভক্তি ও অন্ধবিশ্বাসের মধ্যেকার পার্থক্য চমৎকারভাবে তুলে ধরার জন্য পরিচিত। এর তিনটি সিজনই দর্শকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং এখন ‘আশ্রম ৩’-এর দ্বিতীয় পর্বও মুক্তি পেয়েছে। প্রশ্ন হল, এইবার কি বাবা নিরালার চরিত্রে কিছু নতুন কিছু দেখা গেছে? আসুন জেনে নেওয়া যাক এই ওয়েব সিরিজের নতুন অধ্যায়ের সম্পূর্ণ পর্যালোচনা।
কাহিনীতে নতুন মোড় – বাবার দুর্গে বিদ্রোহের আগুন
‘আশ্রম ৩’-এর দ্বিতীয় পর্বের কাহিনী সেখান থেকেই এগিয়ে যায়, যেখানে প্রথম পর্ব শেষ হয়েছিল। পাম্মী (আদিতি পোহনকার) অত্যাচারের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই শুরু করেছে, কিন্তু বাবা নিরাল নিজেকে আদালতে অক্ষম প্রমাণ করে নির্দোষ ছাড়া পায় এবং পাম্মীর উপর মিথ্যা অভিযোগ বসিয়ে তাকে জেলে পাঠিয়ে দেয়।
এইবার পাম্মীর প্রতিশোধের পদ্ধতি বদলে গেছে। সে বাবার উপর সরাসরি আঘাত করে না, বরং তার সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র – ভোপা স্বামী (চন্দন রায় সান্যাল)-কেই তার জালে ফাঁসিয়ে ফেলে। তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে এবং এমন সময় কাহিনীতে সবচেয়ে বড় টুইস্ট আসে, যখন বাবা নিরাল নিজেই তাদের আপত্তিকর পরিস্থিতিতে ধরে ফেলে। এখান থেকেই ঘটনাপ্রবাহ শুরু হয়, যা বাবাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।
ভোপা-পাম্মীর পরিকল্পনা এবং বাবার ধ্বংস
ভোপাকে ‘শুদ্ধীকরণ’-এর আদেশ দিয়ে বাবা নিজেই তার কবর খুঁড়ে ফেলে। এই ঘটনার পর পাম্মী এবং ভোপা মিলে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে। অন্যদিকে, সাব-ইন্সপেক্টর উজাগর সিংহ (দর্শন কুমার) বাবা নিরালের অতীত সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায়।
উজাগর সিংহের দেখা হয় একজন বৃদ্ধ সাধুর সাথে, যার কাছ থেকে জানা যায় যে বাবা নিরাল আসলে মোন্টি নামের একজন সাধারণ মানুষ ছিল, যে ভোপার সাথে মিলে আসল মনসুখ বাবাকে হত্যা করে তার আসন দখল করেছিল। এই প্রকাশের পর কাহিনীতে নতুন মোড় আসে, যেখানে পাম্মী এবং ভোপা মিলে বাবাকে উৎখাত করার পুরো পরিকল্পনা করে।
"পরিচালনা এবং অভিনয় – কার জাদু চলেছে এবং কে ফিকে থেকে গেছে"
পরিচালক প্রকাশ झা এইবারও চমৎকার পরিচালনা করেছেন। তবে, কিছু দৃশ্য অযথা টানা হয়েছে, বিশেষ করে ভোপা এবং পাম্মীর দৃশ্যগুলি যদি কম করা হতো তাহলে কাহিনী আরও প্রভাবশালী হতে পারত। ববি দেওল বাবা নিরালের চরিত্রটিকে পুরো শক্তি দিয়ে অভিনয় করেছেন। তার অভিব্যক্তি এবং সংলাপ প্রদান দর্শকদের মুগ্ধ করে।
এইবার পাম্মীর চরিত্রটি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে এবং আদিতি পোহনকার এতে চমৎকার অভিনয় করেছেন। চন্দন রায় সান্যাল অর্থাৎ ভোপা স্বামীর পারফরম্যান্সও এইবার আরও উজ্জ্বলভাবে সামনে এসেছে। অন্যদিকে, উজাগর সিংহের চরিত্রে দর্শন কুমারও তার ভূমিকাকে পুরোপুরি ন্যায় দিয়েছেন।
কি দেখা উচিত ‘আশ্রম ৩’-এর দ্বিতীয় পর্ব?
যদি আপনি ‘আশ্রম’ সিরিজের অনুরাগী হন এবং এর গভীর ও मनोरंजक কাহিনী পছন্দ করেন, তাহলে এই নতুন পর্বটিও আপনার পছন্দ হবে। তবে, কিছু অংশ কিছুটা টানা মনে হতে পারে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাহিনী তার আকর্ষণ ধরে রাখে। সামগ্রিকভাবে, এই সিরিজটি আপনাকে প্রতারণা, অন্ধভক্তি এবং রাজনীতির জটিলতা দেখাতে সফল হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে এটিকে ৩ তারকা দেওয়া হচ্ছে। আপনি এটি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আমাজন প্রাইম ভিডিওতে দেখতে পারেন।