অক্ষয় কুমার আবারও বড় পর্দায় নিজের অভিনয় দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন। জালিয়ানওয়ালাবাগের উপর নির্মিত ‘কেসরি ২’ ছবির মাধ্যমে খিলাড়ী কুমার বড় পর্দায় ফিরে এসেছেন, এবং এই ছবি দর্শকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
কেসরি অধ্যায় ২: বিশ্বব্যাপী ষষ্ঠ দিনের আয়: বক্স অফিসে ক্রমাগত ব্যর্থতার সম্মুখীন হওয়া বলিউডের সুপারস্টার অক্ষয় কুমারের জন্য ২০২৫ সালের এই সময় বেশ সুখকর হয়ে উঠছে। তার ‘কেসরি অধ্যায় ২’ ছবিটি মুক্তি পেতেই ভারতে নয়, বিদেশেও চমৎকার সাফল্য অর্জন করে নতুন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
এই ছবির মাধ্যমে অক্ষয় কুমার আবারও প্রমাণ করেছেন যে তাঁর অভিনয় দক্ষতা এবং ছবির গল্প দর্শকদের আকর্ষণ করার ক্ষমতা রাখে। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের উপর নির্মিত এই ছবিতে ভারতে নয়, বিদেশেও দারুণ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
বিদেশে ব্যাপক আয়ের দিকে এগোচ্ছে কেসরি ২
১৮ এপ্রিল ২০২৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কেসরি অধ্যায় ২’ ছবিটি মুক্তির এক সপ্তাহেরও কম সময়ে বিশ্বব্যাপী ১০০ কোটির ক্লাবে যোগদানের কাছাকাছি চলে এসেছে। ছবির মুক্তির পর থেকেই এর আয় নতুন এক দিক ধরেছে, এবং বিশ্বব্যাপী আয়ের ক্ষেত্রে ক্রমাগত উপরের দিকে এগিয়ে চলেছে।
ছবিটি মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি এবং ইউকে-র মতো দেশগুলিতে (যেখানে ভারতীয় ছবিগুলি প্রায়শই ব্যাপক আয় করে) দারুণ সাড়া পেয়েছে। প্রথম দিনের আয়ের পর থেকেই ‘কেসরি ২’ নিজের জায়গা করে নিয়েছে। ছয় দিনের পরিসংখ্যান দেখায় যে ছবিটি বিশ্বব্যাপী ৬৪ কোটি টাকা আয় করেছে। যদি ছবির এই আয়ের ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে এটি খুব শীঘ্রই ১০০ কোটির ক্লাবে যোগদান করবে।
বিশ্বব্যাপী আয়: আমেরিকায় সর্বাধিক আয়
অক্ষয় কুমারের এই ছবিটি বিদেশি বাজারেও, বিশেষ করে আমেরিকায়, দারুণ সাফল্য অর্জন করছে। আমেরিকায় ‘কেসরি ২’ ৮০৭,৬৩৯ মার্কিন ডলার আয় করেছে, যা যেকোনো বলিউড ছবির জন্য একটি বিশাল সংখ্যা। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়াতেও ছবির সাফল্য অসাধারণ, যেখানে এটি ২৭১,৬৯৬ মার্কিন ডলার আয় করেছে। এছাড়াও, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলিতেও ছবিটি ভালো ব্যবসা করেছে।
বক্স অফিসে নজরদারি
‘কেসরি ২’-এর প্রথম ছয় দিনের আয়ের কথা বললে, প্রথম দিন ১৪ কোটি, দ্বিতীয় দিন ৩০ কোটি, তৃতীয় দিন ৪৯.৭৫ কোটি এবং চতুর্থ দিন ৫৬.৬০ কোটি টাকা আয় করেছিল। এই ধরণের অসাধারণ সংখ্যা ছবির সাফল্যের ইঙ্গিত দিচ্ছে। পঞ্চম এবং ষষ্ঠ দিনেও ছবির আয় স্থির ছিল এবং ষষ্ঠ দিনে ছবিটি প্রায় ৮ কোটি টাকা আয় করেছে।
এখন ছবিটিকে ১০০ কোটির ক্লাবে যোগদানের জন্য মাত্র ৩৬ কোটি টাকা আরও আয় করতে হবে, যা এর বিশ্বব্যাপী সাফল্য দেখে কোনও কঠিন কাজ মনে হয় না।
ছবির প্রভাব: ভারতীয় চলচ্চিত্রের বিশ্বব্যাপী প্রভাব
‘কেসরি অধ্যায় ২’ কে একটি ঐতিহাসিক ছবি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই ছবিটি জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের মতো বেদনাদায়ক ঘটনার উপর নির্মিত, যা অক্ষয় কুমার বড় স্পর্শকাতরতার সাথে পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন। এই ছবি ভারতীয় ইতিহাসের এমন একটি ঘটনাকে তুলে ধরেছে যা কেবল ভারতের জন্যই নয়, পুরো বিশ্বের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্য।
অক্ষয় কুমারের চমৎকার অভিনয়, অনন্যা পাণ্ডে এবং আর মাধবনের শক্তিশালী চরিত্র এবং ছবির চমৎকার প্রযোজনার মান এটিকে দর্শকদের কাছে নতুন এক পরিচয় দিয়েছে। ছবির গল্পে গুরুত্ব এবং সংবেদনশীলতার সাথে সাথে অ্যাকশন এবং নাটকের চমৎকার মিশ্রণ দেখা গেছে, যা দর্শকদের আকৃষ্ট করে রাখে।
অক্ষয় কুমারের সাফল্যের চাবিকাঠি
অক্ষয় কুমারের ছবির জন্য এই নতুন অর্জন অনেক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি অক্ষয় কুমারের ছবিগুলি বক্স অফিসে প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি, কিন্তু ‘কেসরি অধ্যায় ২’ তাঁকে স্বস্তির নিশ্বাস দিয়েছে। ছবির প্রচারে তিনি কোনও কার্নি করেননি এবং জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে তিনি দর্শকদের সাথে যুক্ত হতে সক্ষম হয়েছেন।
এই ছবি অক্ষয় কুমারের কর্মজীবনের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে, কারণ তিনি এই ছবির মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে বড় পর্দায় তুলে ধরেছেন, যা দর্শকদের অন্তরে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে।
আগামী পথ: ১০০ কোটির ক্লাবে যোগদান
অক্ষয় কুমারের জন্য এই ছবির সাফল্য কেবল বক্স অফিসের আয়ের ক্ষেত্রেই নয়, বরং ভারতীয় চলচ্চিত্রের বিশ্বব্যাপী বর্ধমান প্রভাবকেও তুলে ধরে। ছবিটি বিদেশে ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের শক্তিকে প্রমাণ করেছে, এবং এটিকে দেখে আশা করা হচ্ছে যে ‘কেসরি অধ্যায় ২’ খুব শীঘ্রই ১০০ কোটির ক্লাবে যোগদান করবে।