নীল নীতীন মুকেশ বলিউড সম্পর্কে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন যা সমগ্র চলচ্চিত্র জগতে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। নীল বলিউডকে ‘টক্সিক’ (বিষাক্ত) স্থান বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে এই শিল্পে মানুষকে নানা ধরণের মানসিক ও মানসিক কষ্টের সম্মুখীন হতে হয়।
Neil Nitin Mukesh: বলিউডের জগতে প্রায়শই গ্ল্যামার ও সাফল্যের ঝলকানি দেখা যায়, কিন্তু এর পিছনে লুকিয়ে থাকা ব্যথা ও সংগ্রামের গল্পও কম নয়। বলিউড অভিনেতা নীল নীতীন মুকেশ সম্প্রতি এই শিল্পের বিষাক্ত পরিবেশ সম্পর্কে বড় বক্তব্য দিয়েছেন। নীলের মতে, বলিউড একটি ‘বিষাক্ত’ স্থানে পরিণত হয়েছে, যেখানে নেতিবাচকতা ও সমালোচনার পরিবেশ বিরাজ করছে। তার এই বক্তব্য বর্তমানে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে এবং এটি চলচ্চিত্র শিল্পের ভেতরের প্রকৃত অবস্থা উন্মোচন করেছে।
বলিউডের অন্ধকার সত্য
নীল নীতীন মুকেশ তার আসন্ন ওয়েব সিরিজ ‘হ্যাঁ জুনুন’ প্রচারের সময় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাথে আলাপচারিতায় বলিউডের বিষাক্ত পরিবেশ সম্পর্কে তার মতামত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, বলিউডে অনেকেই অন্যদের ব্যর্থতায় আনন্দ পান। এখানে একে অপরের সাফল্যের প্রশংসা করার পরিবর্তে, মানুষ অন্যের পতনে তীব্র ব্যঙ্গ করে। এটি একটি অত্যন্ত নেতিবাচক ও বিষাক্ত পরিবেশে পরিণত হয়েছে। এই শিল্পে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ও সমর্থনের অভাব অনুভূত হয়।
বডি শেমিং এবং গুজবের মুখোমুখি
নীল আরও বলেছেন যে এই শিল্পে অধিকাংশ লোক একে অপরের ব্যক্তিগত জীবন ও শারীরিক সৌন্দর্যের দিকে নজর দেয়, তারা কারুর কলা ও অভিনয়ের প্রশংসা করার পরিবর্তে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেছেন যে তাকে তার ওয়েব সিরিজ ‘হ্যাঁ জুনুন’ এর জন্য ওজন কমাতে হয়েছিল, যার পরে তার সম্পর্কে নানা ধরণের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ তাকে অসুস্থ ও দুর্বল বলে অভিযুক্ত করেছে, যেখানে তার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল তার চরিত্রের জন্য শারীরিক পরিবর্তন আনা।
এই সময়, নীল এটাও বলেছেন যে বডি শেমিংয়ের কারণে অনেক শিল্পী মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার সম্মুখীন হন, যা তাদেরকে তাদের কলায় নয়, বরং তাদের বহিরাঙ্গন চেহারা উন্নত করার দিকে উৎসাহিত করে।
পুরোনো ও নতুন বলিউডের পার্থক্য
নীল নীতীন মুকেশ বলিউডের পুরোনো যুগ ও বর্তমান যুগের তুলনা করে বলেছেন যে পূর্বে বলিউডে চলচ্চিত্র নির্মাণ উন্মাদনা ও সহযোগিতার মাধ্যমে হত। রাজ কাপুর, দিলীপ কুমারের মতো दिग्गजদের সময় শিল্পীরা একে অপরের সাহায্য করতেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতেন। কিন্তু বর্তমানে, এই পরিবেশ সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হয়েছে।
এখন চলচ্চিত্র শিল্পে মানুষ তাদের ব্যর্থতা ও অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষার সাথে লড়াই করছে এবং একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতায় জড়িত থাকে। তিনি বলেছেন, বর্তমানে, প্রত্যেকেই তার সাফল্য লুকানোর চেষ্টা করে এবং কাজের প্রতি উন্মাদনার পরিবর্তে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
‘হ্যাঁ জুনুন’ দিয়ে ডিজিটাল অভিষেক
নীল নীতীন মুকেশের এই বক্তব্য বলিউড শিল্পে নেতিবাচকতার সমস্যাটি উন্মোচন করেছে, কিন্তু তার এই বক্তব্য তার কর্মজীবনের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনাও বহন করে। নীল এখন তার আসন্ন ওয়েব সিরিজ ‘হ্যাঁ জুনুন’ দিয়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে পদার্পণ করতে যাচ্ছেন। এই সিরিজটি ১৬ মে ২০২৫ সালে JioHotstar-এ মুক্তি পাবে। এই মিউজিক্যাল ড্রামায় নীলের সাথে জ্যাকলিন ফার্নান্দেজ, বোমন ইরানী, সিদ্ধার্থ নিগম ও সুমেধ মুদগলকারের মতো তারকারা অভিনয় করবেন।
সিরিজে নীল গগন আহুজার চরিত্রে অভিনয় করবেন, যিনি একজন শৃঙ্খলাবদ্ধ মেন্টরের ভূমিকায় অভিনয় করবেন। এই শো-এর গল্প মুম্বাইয়ের অ্যান্ডারসন কলেজে অনুষ্ঠিত মিউজিক ও নৃত্য প্রতিযোগিতার উপর ভিত্তি করে। নীলের মতে, এই শো-এর জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করেছেন এবং এখন তিনি তার ডিজিটাল কর্মজীবনের সূচনার জন্য অত্যন্ত উত্তেজিত।