নেটফ্লিক্সের মিনি সিরিজ ‘অ্যাডোলেসেন্স’ (Adolescence) এখন সর্বত্র আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। চারটি পর্বের এই সিরিজটি ৯৩টি দেশে ট্রেন্ড করছে। সম্প্রতি এর লেখক দ্বিতীয় সিজন সম্পর্কে বড় একটি আপডেট দিয়েছেন।
মনোরঞ্জন ডেস্ক: নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয় মিনি সিরিজ ‘অ্যাডোলেসেন্স’ (Adolescence) বিশ্বজুড়ে ট্রেন্ড করছে। মাত্র চারটি পর্বে সীমাবদ্ধ এই ক্রাইম-ড্রামা দর্শকদের মনে অনেক প্রশ্ন রেখে গেছে। বিশেষ করে, এর উন্মুক্ত শেষ (ওপেন-এন্ডেড ক্লাইম্যাক্স) দেখার পর দর্শকরা ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন, এর দ্বিতীয় সিজন আসবে কি না? কিন্তু এখন এ ব্যাপারে সরকারি আপডেট চলে এসেছে। এই সিরিজের লেখক জ্যাক থর্ন (Jack Thorne) নিজেই জানিয়েছেন যে ‘অ্যাডোলেসেন্স’-এর দ্বিতীয় সিজন তৈরি হবে না।
‘অ্যাডোলেসেন্স’-এর দ্বিতীয় পর্ব কেন তৈরি হবে না?
জ্যাক থর্ন সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে ‘অ্যাডোলেসেন্স’-এর দ্বিতীয় সিজন তৈরির কোনও পরিকল্পনা নেই। তিনি দুটি বড় কারণ উল্লেখ করেছেন, যার ফলে নির্মাতারা এই সিরিজকে আর এগিয়ে না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রথম কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, "আমাদের লক্ষ্য ছিল আমরা জেমির গল্পটি সম্পূর্ণরূপে দেখাতে পারব এবং আমরা তাই করেছি। যদি আমরা কেটির গল্পটি এগিয়ে নিই, তাহলে তা দুর্বল মনে হতে পারে।"
দ্বিতীয় কারণ হল, "জেমির গল্প এখন শেষ হয়ে গেছে। আমার মনে হয় না যে আমরা তাকে আর কোনও দিকে নিয়ে যেতে পারব।"
থর্নের পাশাপাশি এই সিরিজের সহ-প্রযোজক এবং অভিনেতা স্টিফেন গ্রাহাম (Stephen Graham)ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে পরবর্তী পর্বের কোনও সম্ভাবনা নেই। টুডাম (Tudum)-এর সাথে আলাপচারিতায় তিনি বলেছেন, "এই সিরিজের মাধ্যমে আমাদের উদ্দেশ্য ছিল দেখানো যে আজকের যুব প্রজন্ম কোন চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে - বন্ধুবান্ধব, ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার তাদের উপর কী প্রভাব পড়ছে?"
ওয়ান-শট ক্যামেরা ওয়ার্ক নিয়ে আলোচনায় থাকা সিরিজ
‘অ্যাডোলেসেন্স’ যেমনভাবে শুট করা হয়েছে, তাও দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই সিরিজের প্রতিটি পর্ব একই শটে (One-shot format) শুট করা হয়েছে, যার ফলে এর তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। এই ব্যাপারে জ্যাক থর্ন বলেছেন, "আমি এই ফরম্যাটে ভবিষ্যতেও কাজ করতে চাই, কিন্তু আমার মনে হয় না ‘অ্যাডোলেসেন্স’-এর দ্বিতীয় সিজন তৈরির কোনও মানে হয়।"
৯৩টি দেশে ট্রেন্ড করছে ‘অ্যাডোলেসেন্স’
‘অ্যাডোলেসেন্স’ ১৩ই মার্চ নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে এবং দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ২৬শে মার্চ পর্যন্ত এই সিরিজটি ৬৬.৩ মিলিয়ন ভিউ পেয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী ৯৩টি দেশে ট্রেন্ড করছে। টুডাম একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানিয়েছে যে মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি দেখা সিরিজ হয়ে উঠেছে।
‘অ্যাডোলেসেন্স’-এর গল্প কী?
এই সিরিজটি ১৩ বছর বয়সী ছেলে জেমি মিলার (Jamie Miller)-এর গল্পের উপর ভিত্তি করে তৈরি, যে তার ক্লাসমেটকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়। পুরো সিরিজটি এই প্রশ্নের চারপাশে ঘোরে যে জেমি কেন এমনটা করেছে? তার মানসিক অবস্থা, পারিবারিক পরিবেশ এবং সমাজের চাপ বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে।
এর শেষ দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত রেখে দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা নিজেরাই এই ঘটনার উপর চিন্তাভাবনা করার সুযোগ পায়। এটাই কারণ যে দর্শকরা দ্বিতীয় সিজনের আশা করছিলেন, কিন্তু এখন নির্মাতারা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে এই গল্প এখানেই শেষ।
‘অ্যাডোলেসেন্স’-এর মত আরও গল্প দেখা যাবে কি?
যদিও ‘অ্যাডোলেসেন্স’-এর দ্বিতীয় পর্ব আসবে না, তবুও নির্মাতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ভবিষ্যতে এ ধরণের আরও গল্প সামনে আসতে পারে। জ্যাক থর্ন এবং স্টিফেন গ্রাহাম উভয়ই এই বিষয়ে জোর দিয়েছেন যে তারা ভবিষ্যতেও এ ধরণের ইস্যু ভিত্তিক সিরিজ তৈরির পরিকল্পনা করছেন।
‘অ্যাডোলেসেন্স’ দর্শকদের উপর গভীর ছাপ রেখে গেছে এবং এর তীব্র বর্ণনার জন্য এটি দীর্ঘদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
