কমল হাসনের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ‘ঠগ লাইফ’ সুপ্রিম কোর্টে

কমল হাসনের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ‘ঠগ লাইফ’ সুপ্রিম কোর্টে
সর্বশেষ আপডেট: 10-06-2025

কমল হাসন এবং মণি রত্নমের অধীর আকাঙ্ক্ষিত চলচ্চিত্র ‘ঠগ লাইফ’ মুক্তির আগেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে। ভাবা বিতর্ক এতটাই তীব্র হয়েছে যে কর্ণাটকে এর প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টে ‘ঠগ লাইফ’ নিয়ে শুনানি: বিশিষ্ট অভিনেতা কমল হাসন এবং খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা মণি রত্নমের অধীর আকাঙ্ক্ষিত চলচ্চিত্র ‘ঠগ লাইফ’ মুক্তির আগেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে কর্ণাটকে এই চলচ্চিত্রের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জোরদার হয়ে উঠেছে। এখন এই ঘটনা সরাসরি দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছেছে, যেখানে ২০২৫ সালের ১৩ই জুন এই বিষয়ে শুনানির দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়েছে। এই শুনানির মাধ্যমে স্থির হবে কর্ণাটকে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাবে কিনা।

বিতর্কের মূল: কমল হাসনের বিতর্কিত মন্তব্য

এই বিতর্কের সূত্রপাত হয় সম্প্রতি চলচ্চিত্রটির অডিও উন্মোচন অনুষ্ঠানে কমল হাসনের দেওয়া এক মন্তব্য থেকে। তিনি বলেন, কন্নড় ভাষার উৎপত্তি তামিল থেকে। এই মন্তব্যকে কর্ণাটকের বহু সামাজিক ও ভাষা সংগঠন অপমানজনক ও উস্কানিমূলক বলে আখ্যায়িত করেছে। ভাষা গৌরবের নামে শুরু হওয়া এই বিতর্ক এখন এতটাই বেড়েছে যে কর্ণাটকে চলচ্চিত্রটির প্রদর্শন নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। বহু সংগঠন সিনেমা হলের সামনে বিক্ষোভ করেছে, পোস্টার পুড়িয়েছে এবং থিয়েটার মালিকদের হুমকিও দিয়েছে।

হাইকোর্টের পরামর্শ: ক্ষমা চাওয়া, বিষয়টি শেষ করা

এই বিষয়ে কর্ণাটক হাইকোর্টও হস্তক্ষেপ করে কমল হাসনকে “জনতার কাছে ক্ষমা চাওয়ার” পরামর্শ দিয়েছে। কোর্টের মতে, যদি কমল হাসন ক্ষমা চান তাহলে বিতর্ক এখানেই শেষ করা যাবে। তবে কমল হাসন ক্ষমা চাওয়া থেকে বিরত থেকে নিজের বক্তব্যকে “ভাষাগত ভুল ব্যাখ্যা” (linguistic misinterpretation) বলে ব্যাখ্যা করেছেন।

তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে তার উদ্দেশ্য কোনও ভাষাকে অপমান করা ছিল না। একটি চিঠির মাধ্যমে তিনি কর্ণাটক ফিল্ম চেম্বার অফ কমার্সকে উদ্দেশ্য করে জানিয়েছেন যে তিনি ভারতের প্রতিটি ভাষা এবং এর বৈচিত্র্যের সম্মান করেন।

সুপ্রিম কোর্টে ১৩ জুন শুনানি

কর্ণাটকে বর্ধমান প্রতিবাদের মধ্যে বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা মহেশ রেড্ডি সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন দাখিল করে চলচ্চিত্রটি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট প্রথমে প্রশ্ন তুলেছে যে আবেদনকারী কর্ণাটক হাইকোর্টে কেন যাননি? কিন্তু বিতর্ক ও আবেদনকারীর যুক্তি শোনার পর আদালত ১৩ জুন শুনানির দিনক্ষণ নির্ধারণ করেছে।

এই শুনানি স্থির করবে যে কর্ণাটকে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাবে কিনা। এখনকার জন্য রাজ্যের অনেক জেলায় স্থানীয় প্রশাসন চলচ্চিত্রটির প্রদর্শনের উপর নজরদারি বাড়িয়ে দিয়েছে।

তামিলনাড়ু সরকারের সমর্থন, বিশেষ প্রদর্শনের অনুমতি

যেখানে একদিকে কর্ণাটকে প্রতিবাদ চলছে, অন্যদিকে তামিলনাড়ুতে ‘ঠগ লাইফ’কে ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছে। রাজ্য সরকার চলচ্চিত্রটির প্রতি ইতিবাচক মনোভাব গ্রহণ করে সকালের বিশেষ প্রদর্শনের অনুমতিও দিয়েছে। এই ঘটনা তামিলনাড়ুতে চলচ্চিত্রটি নিয়ে যে তীব্র উৎসাহ রয়েছে তা প্রমাণ করে এবং এখানে এটিকে একটি সাংস্কৃতিক ও চলচ্চিত্রগত সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।

‘ঠগ লাইফ’ চলচ্চিত্রে কমল হাসন এবং মণি রত্নম ৩৮ বছর পর ফিরে এসেছেন। দুজনে শেষবার ১৯৮৭ সালে সুপারহিট চলচ্চিত্র ‘নায়কন’-এ একসাথে অভিনয় করেছিলেন। এই চলচ্চিত্রটি একটি গ্যাংস্টার ড্রামা, যেখানে কমল হাসনের সাথে সিলম্বারাসন টি.আর., তৃষা, নাসার, সানিয়া মালহোত্রা এবং আলি ফজলও অভিনয় করেছেন। চলচ্চিত্রটি রাজকমল ফিল্মস ইন্টারন্যাশনাল এবং মাদ্রাজ টকিজ যৌথভাবে নির্মাণ করেছে এবং রেড জায়েন্ট মুভিজ বিতরণ করছে।

```

Leave a comment