অক্ষয় কুমার এবং আরশদ ওয়ারসির অধীর আগ্রহের অপেক্ষায় থাকা ছবি ‘জলি এলএলবি ৩’ নিয়ে দর্শকদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। ছবিটির শুটিং এখন জোরেশোরে চলছে, এবং এ নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি আপডেট সামনে এসেছে।
জলি এলএলবি ৩: বলিউডের জনপ্রিয় কোর্টরুম কমেডি সিরিজের তৃতীয় পর্ব ‘জলি এলএলবি ৩’-র জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন দর্শকরা, যেখানে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করছেন অক্ষয় কুমার এবং আরশদ ওয়ারসি। এই ছবির শুটিং রাজস্থানে চলছিল, কিন্তু কিছু বিতর্কের কারণে রাজস্থান হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল, যেখানে ছবির শুটিং এবং মুক্তির উপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছিল। তবে এখন রাজস্থান হাইকোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে অক্ষয় কুমার, আরশদ ওয়ারসি এবং পরিচালক সুভাষ কাপুরকে বড় ধরণের স্বস্তি দিয়েছে।
কী ছিল আবেদন?
রাজস্থানের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি চন্দ্রভান রাঠৌর অজমেরের জেলা আদালতে আবেদন দায়ের করেছিলেন। আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছিল যে ‘জলি এলএলবি ৩’ ছবিতে ন্যায়পালিকা এবং আইনজীবীদের চিত্র ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাঁর মতে, এই ছবি দিয়ে ন্যায়বিচার ব্যবস্থার অবমাননা হবে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ন্যায়পালিকার প্রতি ভুল ধারণা তৈরি হবে। পাশাপাশি, ন্যায়পালিকার মর্যাদা বজায় রাখার জন্য ছবির শুটিং এবং মুক্তির উপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছিল।
রাজস্থান হাইকোর্টের বড় সিদ্ধান্ত
রাজস্থান হাইকোর্ট আবেদনের শুনানির পর স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এখনও ছবিটি মুক্তি পায়নি এবং এর কোনো দৃশ্যও জনসমক্ষে প্রদর্শিত হয়নি। ফলে, শুধুমাত্র আশঙ্কা এবং অনুমানের ভিত্তিতে শুটিং বা মুক্তির উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যুক্তিসঙ্গত হবে না। আদালত আরও বলেছে, যদি ছবি মুক্তির পর কোনো এমন কন্টেন্ট সামনে আসে যা ন্যায়পালিকা বা আইনজীবীদের চিত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তাহলে সেন্সর বোর্ডে অভিযোগ করা যেতে পারে অথবা আদালতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করা যেতে পারে।
হাইকোর্ট অজমের জেলা আদালতের রায় বহাল রেখে আবেদন খারিজ করে দিয়েছে, যার ফলে অক্ষয় কুমার, আরশদ ওয়ারসি এবং ছবির পুরো দল স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে।
রাজস্থানে শুটিংয়ের বহু লোকেশন
‘জলি এলএলবি ৩’-এর শুটিং রাজস্থানের বিভিন্ন স্থানে হয়েছে। অজমের সহ আরও অনেক জায়গায় ছবির কিছু গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য চিত্রায়ন করা হয়েছে। রাজস্থানের সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলি ছবিটিকে একটি বিশেষ চেহারা এবং পরিবেশ দিয়েছে। শুটিংয়ের সময় স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশের সহযোগিতাও পাওয়া গেছে যাতে কাজ সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে।
‘জলি এলএলবি ৩’-এর আগের দুটি পর্ব বক্স অফিসে চমৎকার সাফল্য অর্জন করেছে এবং দর্শকদের হাসি-ঠাট্টার মাধ্যমে আদালতের প্রক্রিয়াগুলি বুঝিয়ে দেওয়ায় সফল হয়েছে। এই ছবিগুলি আইনি জটিলতাগুলিকে সহজ এবং মনোরঞ্জনমূলকভাবে উপস্থাপন করেছে, যা দর্শকদের কাছে বেশ পছন্দের হয়েছে।
তৃতীয় পর্ব নিয়েও প্রচুর আশা রয়েছে, কারণ অক্ষয় কুমারের অভিনয় এবং তাঁর বিশেষ অভিনয়শৈলী দর্শকদের দ্বারা ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে। আরশদ ওয়ারসিও আগের মতোই তাঁর চরিত্রে দাপটপূর্ণ অভিনয় করতে চলেছেন। এই ছবিটি পরিচালনা করছেন সুভাষ কাপুর, যিনি আগের পর্বগুলির সাফল্যকে মাথায় রেখে গল্পে নতুন টুইস্ট এবং কমেডির ছোঁয়া দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
বলিউডে কোর্টরুম কমেডির জনপ্রিয়তা
‘জলি এলএলবি’ সিরিজ কোর্টরুম ড্রামাকে এক নতুন রঙ দিয়েছে। যেখানে সাধারণত আদালতের ছবি গুরুতর এবং নাটকীয় হয়, সেখানে এই ছবিগুলি হাস্যরস এবং ব্যঙ্গের মাধ্যমে ন্যায়বিচার ব্যবস্থার দিকগুলি তুলে ধরে। এই কারণে এই ছবিগুলি সকল শ্রেণীর দর্শকদের কাছে বেশ পছন্দের হয়। রাজস্থান হাইকোর্টের এই রায়ও এই বিষয়েরই উদাহরণ যে ন্যায়বিচার ব্যবস্থার মর্যাদার সাথে সাথে অভিব্যক্তির স্বাধীনতার সম্মানও করা উচিত।
রাজস্থান হাইকোর্টের রায়ের পর এখন ‘জলি এলএলবি ৩’-এর শুটিং পুরোদমে চলবে এবং আশা করা হচ্ছে যে এই ছবিটি বছরের শেষের মধ্যে সিনেমা হলে মুক্তি পাবে।